Home Bangla Recent তৈরি পোশাক রফতানির উৎসে কর কমছে

তৈরি পোশাক রফতানির উৎসে কর কমছে

কর্পোরেট কর আগের মতোই থাকছে

তৈরি পোশাক রফতানিকারকদের জন্য সুখবর আসছে। পণ্য রফতানির উৎসে কর ২০১৭-১৮ অর্থবছরের চেয়ে আরও কমিয়ে শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে তৈরি পোশাক খাতের কর্পোরেট করও আগের মতোই রাখা হচ্ছে। ঈদের পরই এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

সূত্র জানায়, আয়কর অধ্যাদেশের ৫৩বি ধারায় তৈরি পোশাক খাতের উৎসে কর ১ শতাংশ নির্ধারণ করে দেয়া আছে। প্রতি বছরই বাজেট ঘোষণার সময় অর্থমন্ত্রী উৎসে কর হার কত হবে তা নির্ধারণ করে দেন অথবা বাজেটের পর প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে উৎসে কর হার নির্ধারণ করে দেয়া হয়। এ প্রজ্ঞাপনের মেয়াদ থাকে এক বছর। এবারের প্রস্তাবিত ও চূড়ান্ত বাজেটে উৎসে কর হার হ্রাস-বৃদ্ধি সংক্রান্ত প্রস্তাব না থাকায় এবং আগের প্রজ্ঞাপনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আইন অনুযায়ী তা এক শতাংশ কার্যকর হয়। এরপরই উৎসে কর ও কর্পোরেট কর কমাতে রফতানিকারকরা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) উৎসে কর আগের মতোই শূন্য দশমিক ৭০ শতাংশ বহাল রাখার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু সরকারের শীর্ষ মহল থেকে উৎসে কর এক শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ নির্ধারণ করতে বলা হয়। সে অনুযায়ী প্রস্তাব তৈরি করে আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে তা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হবে। ঈদের পরপরই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

প্রসঙ্গত, উৎসে কর আদায় করা হয় রফতানি মূল্যের ওপর। কোনো রফতানিকারক ১০০ টাকার পণ্য রফতানি করলে ৭০ পয়সা উৎসে কর হিসেবে দিতে হয়। প্রতি বছর আড়াই হাজার কোটি টাকা তৈরি পোশাক খাতের উৎসে কর হিসেবে আদায় করা হয়। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে উৎসে কর হার শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ ছিল। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাজেটে তা দ্বিগুণ করে শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ করা হয়। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে উৎসে কর এক দশমিক ৫০ শতাংশ করার প্রস্তাব দেয়া হলেও শেষ পর্যন্ত ৭০ পয়সায় নির্ধারণ করা হয়। একই হারে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে উৎসে কর দেন উদ্যোক্তারা। এবারের প্রস্তাবিত ও চূড়ান্ত বাজেটে উৎসে কর হার নির্ধারণ করে না দেয়ায় রফতানিকারকদের ১ শতাংশ দিতে হচ্ছে।

একই সঙ্গে তৈরি পোশাক খাতের কর্পোরেট করও আগের অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সাধারণ কারখানার কর্পোরেট কর ১৫ শতাংশ এবং পাবলিক লিমিটেড বা যৌথ মূলধনি কোম্পানির কর হার সাড়ে ১২ শতাংশ করার প্রস্তাব দেন অর্থমন্ত্রী। বাজেটে এ প্রস্তাব পাস হয়। উভয় ক্ষেত্রেই গত অর্থবছর করের হার ছিল ১২ শতাংশ। অন্যদিকে পরিবেশসম্মত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত গ্রিন বিল্ডিং সার্টিফিকেটপ্রাপ্ত কারখানার করহার ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২ শতাংশ করা হয়। এই কর্পোরেট কর হার আগের মতোই ১২ শতাংশ এবং ১০ শতাংশ করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, বর্তমান সরকার ব্যবসাবান্ধব সরকার। তৈরি পোশাক খাতের উৎসে কর কমানোর সিদ্ধান্ত আবারও সেটি প্রমাণ করেছে। তবে উৎসে কর কেন বারবার ১ শতাংশ করা হচ্ছে, সেটি ব্যবসায়ীদের বোধগম্য নয়। এনবিআরের উচিত একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত উৎসে কর ও কর্পোরেট কর একই অবস্থানে রাখা।

তিনি আরও বলেন, সরকারের সহযোগিতার কারণে পোশাক শিল্প আজ বিশ্বের দরবারে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। এ অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয় এমন সিদ্ধান্ত কোনো সংস্থারই নেয়া উচিত নয়। যতদিন পর্যন্ত রফতানি বহুমুখীকরণ না হয়, ততদিন পোশাক শিল্পকে অব্যাহত সহযোগিতা দিয়ে যাওয়া উচিত। পাশাপাশি ওষুধ, চামড়া ও আইসিটির মতো খাতগুলোর সমস্যা চিহ্নিত করে পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here