Home Bangla Recent পোশাক খাতের কল্যাণ তহবিল জমা পড়েনি কাঙ্ক্ষিত অর্থ

পোশাক খাতের কল্যাণ তহবিল জমা পড়েনি কাঙ্ক্ষিত অর্থ

শ্রম আইন অনুসারে তৈরি পোশাক খাতের জন্য গঠিত কেন্দ্রীয় কল্যাণ তহবিলে প্রত্যাশিত টাকার চেয়ে কম জমা পড়েছে, যা প্রায় ৩৪ শতাংশ। রপ্তানিকারদের প্রতিটি রপ্তানির বিপরীতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ স্বয়ংক্রিয়ভাবে এ তহবিলে জমা হয়। কিন্তু লিয়েন ব্যাংকগুলো সব রপ্তানির বিপরীতে অর্থ কর্তন না করায় এমনটা হয়েছে বলে শ্রম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়।

এদিকে শ্রম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল বা ইপিজেডের কারখানাগুলো তাদের রপ্তানির বিপরীতে নির্দিষ্ট অর্থ জমা না দেওয়ায় এ ঘাটতিতে পড়েছে। তবে ইপিজেড কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের কারখানাগুলো যেহেতু প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আওতাধীন এবং তাঁর দপ্তর থেকে এ তহবিলে অর্থ জমা দেওয়ার কোনো নির্দেশনাও নেই। তাই তাদের কারখানার মালিকরা এ তহবিলে অর্থ জমা দেন না।

২০১৩ সালের সংশোধিত শ্রম আইনের আওতায় ২০১৬ সালের ১ জুলাই পোশাক খাতের জন্য এই কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়। রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানা তার পণ্য জাহাজীকরণ সময়ে বা এফওবির শূন্য দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ হারে কেন্দ্রীয় কল্যাণ তহবিলে জমা দেবে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরের দেশের মোট পোশাক খাতের রপ্তানি আয় অনুসারে ১৪৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা জমা হওয়ার কথা। কিন্তু এ সময়ে জমা হয়েছে ১০০ কোটি টাকা। ফলে গত দুই অর্থবছরে প্রত্যাশিত জমার চেয়ে প্রায় ৩৪ শতাংশ বা ৪৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা কম জমা পড়েছে।

পোশাক খাতের কেন্দ্রীয় কল্যাণ তহবিলের মহাপরিচালক আনিসুল আউয়াল কালের কণ্ঠকে বলেন, ইপিজেডের কারখানাগুলো পোশাক খাতের সংগঠন বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ সদস্য না হওয়ায় ওই নির্দেশনা অনুসারে রপ্তানি আয়ের বিপরীতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় তহবিলে এ টাকা কর্তন করেনি। ফলে গত দুই বছরের তাদের তহবিলে প্রায় ৪৮ কোটি টাকা কম জমা পড়েছে।

এ ব্যাপারে আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানিয়েছি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে প্রতিটি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে ০.০৩ শতাংশ হারে কর্তন করার নির্দেশ দিয়েছে।

রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) জনসংযোগ কর্মকর্তা নাজমা বিনেত আলমগীর কালের কণ্ঠকে জানান, তাঁদের কারখানাগুলো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আওতাধীন এবং এ ব্যাপারে তাঁর কার্যালয় থেকে কোনো নির্দেশনাও নেই। ফলে তাঁদের কারখানাগুলো এ তহবিলে কোনো টাকা জমা দেয় না।

এদিকে কল্যাণ তহবিল সূত্রে জানা যায়, পোশাক খাতের কেন্দ্রীয় কল্যাণ তহবিল থেকে এ পর্যন্ত পোশাক খাতের সংগঠন বিজিএমইএকে ৫০ কোটি টাকার বেশি টাকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে থেকে তারা বিভিন্ন কারখানার এক হাজার ৩৩৬ জন নিহত ও আহত শ্রমিকের পরিবারকে ২৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকার অনুদান দেওয়া দিয়েছে। এ ছাড়া বকেয়া মজুরি বাবদ দেওয়া হয়েছে ১০ লাখ টাকারও বেশি।

রপ্তানি আয়ের বিপরীতে পাওয়া এ অর্থ বেনিফিশিয়ারি এবং কন্টিনজেন্সি নামে দুটি ব্যাংক হিসাবে জমা হয়। পোশাক খাতের শ্রমিক ও তার পরিবার বেনিফিশিয়ারি হিসাব থেকে অনুদান পায় এবং কোনো কারখানা বকেয়া মজুরি দিতে অসমর্থ হলে এবং শ্রমিকের বীমার দাবি মেটাতে কন্টিনজেন্সি হিসাব থেকে দাবির টাকা পরিশোধ করা হয়।

২০১৬-১৭ অর্থবছরে পোশাক রপ্তানি হয় দুই হাজার ৮০০ কোটি ১৪ লাখ ডলার এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আয় হয়েছে তিন হাজার ৬১ কোটি ডলার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here