Home Bangla Recent পাটপণ্যের বড় বাজার হবে ইউরোপ

পাটপণ্যের বড় বাজার হবে ইউরোপ

সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে ঢাকায় প্যারিসের বাণিজ্য প্রতিনিধি দল

এক সময় পাটপণ্যের বড় বাজার ছিল ইউরোপ। পলিমারসহ অন্যান্য কৃত্রিম তন্তুর প্রভাবে সেই বাজার হারায় বাংলাদেশ। পরিবেশ ও জীবনের জন্য ক্ষতিকর কৃত্রিম তন্তুর ব্যবহারের বিপদ এখন বুঝতে পেরেছেন ইউরোপের নীতিনির্ধারকরা। সেখানে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে আনা হয়েছে। অনেক দেশেই প্লাস্টিকের ব্যাগ নিষিদ্ধ হয়েছে। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে ইউরোপে পাটপণ্যের রফতানি বাড়ছে। গত বছর বাংলাদেশের পাটপণ্যে ভারত সরকারের অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক্কারোপের কারণে বিপদে পড়া বাংলাদেশও বিকল্প বাজার হিসেবে ইউরোপের প্রতি বাড়তি মনোযোগ দিচ্ছে।

এ বাস্তবতায় বাংলাদেশ থেকে পাট ও পাটপণ্য আমদানি বাড়ানোর সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখতে ফ্রান্সের প্রভাবশালী একটি প্রতিনিধি দল আজ ঢাকায় আসছে।

ফ্রান্সের ডিরেক্টরেট জেনারেল ফর এন্টারপ্রাইজের (ডিজিই) সহযোগিতায় ফ্রান্স ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কমিশন এ সফরের আয়োজন করছে। ফ্রান্স ক্লাস্টার অব ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড এগ্রো রিসোর্সের (্‌আইএআর) নেতৃত্বে প্যারিসভিত্তিক ৮টি কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে প্রতিনিধি দলটি পাটমন্ত্রী ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিকসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবে। আগামীকাল রাজধানীর গুলশানে আগা খান ফাউন্ডেশনে আয়োজিত এক সেমিনারে বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠন, ফেডারেশন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করবেন তারা। সফরে কয়েকটি পাটকল পরিদর্শনের কথা রয়েছে তাদের। কলকাতাভিত্তিক পাট বাণিজ্য-সংশ্নিষ্টদের সঙ্গেও একই উদ্দেশ্যে বৈঠক করবেন তারা। তিন দিনের ঢাকা সফর শেষে আগামী মঙ্গলবার কলকাতার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বে প্রতিনিধি দলটি।

জানতে চাইলে পাট সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী গতকাল সমকালকে বলেন, অনেক আগে ইউরোপ ছিল বাংলাদেশের পাটপণ্যের প্রধান বাজার। এখন আর সেই পর্যায়ে নেই। তবে এখনও ইউরোপে পাটপণ্য যাচ্ছে। নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশি পাটপণ্যের বড় বাজার। তিনি বলেন, বিভিন্ন কারণে পাটের রফতানি বাড়াতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। সে দিক থেকে শুল্ক্কমুক্ত সুবিধার বাজার ইউরোপে মনোযোগ বাড়াতে চান তারা।

জোটগতভাবে বাংলাদেশের প্রধান রফতানি বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এ দেশের মোট রফতানি আয়ের ৬২ শতাংশ আসে জোটের বিভিন্ন দেশ থেকে। অস্ত্র ছাড়া সব পণ্যে শুল্ক্কমুক্ত রফতানি সুবিধা সত্ত্বেও তৈরি পোশাক ছাড়া পাট কিংবা অন্য কোনো পণ্য তেমন সুবিধা করতে পারেনি। গেল ২০১৭-১৮ অর্থবছরে পাট ও পাটপণ্য রফতানি থেকে আয় এসেছে ১০৩ কোটি ডলার। আগের অর্থবছর থেকে রফতানি বেড়েছে সাড়ে ছয় শতাংশ।

উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিক্রি না হওয়ায় ৪০ হাজার টন পাটপণ্যের বড় মজুদ নিয়ে বিপদে আছে অনেক কারখানা। মজুদ এসব পণ্যের মূল্য সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা। পাটপণ্যের প্রধান রফতানি বাজার ভারতে রফতানি ব্যাপক হারে কমে যাওয়ার কারণেই মূলত সংকট প্রকট হয়েছে। ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশি পাটপণ্যে টনপ্রতি সর্বোচ্চ ৩৫২ ডলারসহ বিভিন্ন হারে অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক্ক আরোপ করে ভারত। এক বছরে ভারতে এ খাতের রফতানি কমেছে ৫০ শতাংশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here