Home Bangla Recent গার্মেন্টসে মজুরি ইস্যুতে বড় কর্মসূচির হুঁশিয়ারি

গার্মেন্টসে মজুরি ইস্যুতে বড় কর্মসূচির হুঁশিয়ারি

গার্মেন্টস খাতের শ্রমিকদের জন্য সম্প্রতি ঘোষিত সর্বনিম্ন ৮ হাজার টাকার মজুরি প্রত্যাখ্যান করে দাবি আদায়ে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (জি-স্কপ)। সংগঠনটি সরকারি খাতের শ্রমিকদের জন্য সম্প্রতি  ঘোষিত ১৭ হাজার ৮১২ টাকার সমান মজুরি ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে জি-স্কপের নেতারা এ দাবি জানান। মজুরি ঘোষণার ক্ষেত্রে অতীতের রীতি না মেনে আপত্তি পেশের জন্য সুযোগ না দেওয়া, আইএলও (আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা) নীতিমালা উপেক্ষা করার অভিযোগ তোলা হয়। একই সঙ্গে মালিকদের প্রতি সহানুভূতিশীল আচরণ করে শ্রমিকদের বঞ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করার বিষয়টিকে ‘দুঃখজনক’ আখ্যায়িত করে এজন্য শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নুর সমালোচনাও করা হয়। জি-স্কপের সদস্য সচিব নাইমুল আহসান জুয়েলের সভাপতিত্বে এতে গার্মেন্টস শ্রমিক নেতারা বক্তব্য দেন।

শ্রমিক নেতারা বলেন, স্কপভুক্ত গার্মেন্টস শ্রমিক সংগঠনগুলোর জোটের (জি-স্কপ) নেতৃত্বে গার্মেন্টস শ্রমিকেরা নিম্নতম মজুরি ১৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে। সরকার গত ২ জুলাই তারিখে রাষ্ট্রীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের  জন্য নিম্নতম মজুরি ঘোষণা করে যা ২০১৫ সাল থেকে কার্যকর হবে বলে সরকার সিদ্ধান্ত দেয়। গত ৩ বছরের ইনক্রিমেন্টসহ রাষ্ট্রীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের এই মজুরির বর্তমান পরিমাণ ১৭ হাজার ৮১২ টাকা। অর্থাত্ সরকারের মানদণ্ডেও এটা প্রমাণিত যে, একজন শ্রমিকের মানবিক জীবনযাপনের জন্য ন্যূনতম ১৮ হাজার টাকা প্রয়োজন। কিন্তু সরকার মালিকদের চাপের কাছে নতি স্বীকার করে শ্রমিদের দাবির সঙ্গে প্রহসনমূলক মজুরি ঘোষণা করেছে।  সরকার ৮ হাজার টাকার যে মজুরি ঘোষণা করেছে, তার মধ্যে মূল মজুরি ৪ হাজার ১শ টাকা। ২০১৩ সালে গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য ঘোষিত  নিম্নতম মূল মজুরি ৩ হাজার টাকা ৫ শতাংশ হারে বার্ষিক বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে বিদ্যমান নিম্নতম মূল মজুরি ৩ হাজার ৮২৮ টাকা। অর্থাত্ নতুন মজুরি ঘোষণায় শ্রমিকদের মূল মজুরি মাত্র ২৭২ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে।  যা প্রমাণ করে, মজুরি বোর্ড শ্রম আইনের ১৪১ ধারায় উল্লিখিত মানদণ্ড কিংবা আইএলও কনভেনশন ১৩১ এর মজুরির মাপকাঠিকে কোনো মূল্য দেয়নি।

তারা বলেন, রীতি অনুসারে মজুরি বোর্ডের সুপারিশের পর সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর আপত্তি পেশের জন্য কমপক্ষে ১৫ দিন সময় দেওয়া  উচিত ছিল।  নেতৃবৃন্দ শ্রম প্রতিমন্ত্রীর এই ধরনের আচরণের নিন্দা জানিয়ে বলেন, মালিকদের প্রতি সহানুভূতিশীল আচরণ করে শ্রমিকদের বঞ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করা হয়েছে, যা দুঃখজনক।

এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন শ্রমিক নেতা কামরুল আহসান, আব্দুল ওয়াহেদ, আহসান হাবিব বুলবুল, খালেকুজ্জামান লিপন, সেলিম মাহামুদ, সরদার খোরশেদ, রাণী খান, হাজী মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, লুত্ফুন নাহার লতা, রোকেয়া সুলতানা আঞ্জু, মোহাম্মদ রফিক প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য সর্বশেষ ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে ৫ হাজার ৩শ টাকা ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়।  দেশে ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানা আলোচনার পর গত ২৯ জানুয়ারি নতুন মজুরি বোর্ড গঠন করে সরকার। গত মাসে সর্বশেষ সভায় শ্রমিকপক্ষ ১২ হাজার ২০ টাকা ও মালিকপক্ষ ৬ হাজার ৩৬০ টাকা করার প্রস্তাব দেয়। যদিও শ্রমিক প্রতিনিধির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ১৬ হাজার টাকা মজুরির দাবি জানিয়েছে অনেক শ্রমিক সংগঠন। এই আলোচনার মধ্যেই সম্প্রতি ৫ হাজার ৩শ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮ হাজার টাকা করার  ঘোষণা দেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here