Home Bangla Recent জিএসপির শর্ত পূরণ

জিএসপির শর্ত পূরণ

আরএমজির অন্তর্ভুক্তিসহ দ্রুত ফেরানোর উদ্যোগ নিন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্স (জিএসপি) বা রফতানিতে অগ্রাধিকার প্রাপ্তির বিষয়টি স্থগিত করা হয়েছিল ছয় মাসের কথা বলে; কিন্তু আশ্বাসে আশ্বাসে ছয় বছর পার হয়ে গেলেও কাঙ্ক্ষিত জিএসপি সুবিধা আর ফিরে পায়নি বাংলাদেশ।

উল্লেখ্য, রানা প্লাজা ধসে পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ ও শ্রমিক নিরাপত্তা নিয়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করা হয় ২০১৩ সালের এপ্রিলে, যা কার্যকর হয় একই বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে। ১৬টি শর্তে ছয় মাসের মধ্যে সুবিধাটি ফিরিয়ে দেয়ার কথা ছিল।

কিন্তু ১৫টি শর্ত পূরণ এবং আদালতের নির্দেশের কারণে একটি শর্ত স্থগিত থাকার পরও জিএসপি সুবিধা ফিরে পাওয়া যায়নি। আমরা মনে করি, শর্ত পূরণের পর তৈরি পোশাক (আরএমজি) অন্তর্ভুক্ত করাসহ দ্রুত জিএসপি ফিরে পাওয়ার জন্য জোর প্রচেষ্টা নেয়া দরকার।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে যেখানে ভারত ও তুরস্কের মতো উন্নয়নশীল দেশও পুনর্বিবেচনার আওতায় জিএসপি সুবিধা ফিরে পেয়েছে, সেখানে জিএসপিবহির্ভূত তৈরি পোশাক খাতের দুর্ঘটনাকে বিবেচনায় নিয়ে অন্য খাতের পণ্যের এ সুবিধা স্থগিত করা এবং দীর্ঘ সময় তা ঝুলিয়ে রাখার কোনো যৌক্তিকতা থাকতে পারে না। এটা সত্য, যুক্তরাষ্ট্র একের পর এক অজুহাত দেখিয়ে জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দিচ্ছে না। সর্বশেষ শ্রমিক অসন্তোষে ১৩ হাজার শ্রমিকের চাকরিচ্যুতির বিষয়টি তুলেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।

তবে সরকারের শীর্ষ মহল থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট দফতরের দায়িত্বশীলদের উচিত প্রয়োজনীয় যুক্তিতর্ক দিয়ে জিএসপি সুবিধা ফিরে পাওয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরা। কারণ ২৪৩টি পণ্যে পাওয়া জিএসপি স্থগিত থাকায় আমাদের প্লাস্টিক, সিরামিকসহ অনেক খাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কার্পেটের মতো পণ্যের জিএসপি স্থগিত থাকার অর্থ হল পাট ও পাটজাত দ্রব্যে অন্য দেশের কাছে আমরা মার খাচ্ছি।

এতে পাটের বহুজাতিক ব্যবহার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে যেখানে বাড়তি সুবিধার দাবিদার আমরা, সেখানে জিএসপি সুবিধা দীর্ঘমেয়াদে স্থগিত থাকার বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নেয়ার মতো নয়। এতে করে আমাদের রফতানিমুখী শিল্পগুলোকে প্রতিযোগী দেশগুলোর কাছে মার খেতে হচ্ছে। জিএসপি সুবিধা না থাকার কারণে পণ্যভেদে ১২ থেকে ২০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক গুনতে হচ্ছে আমাদের রফতানিকারকদের। বলার অপেক্ষা রাখে না, এতে করে পর্যায়ক্রমে উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশের কাতারে যাওয়ার আমাদের প্রচেষ্টাও বিলম্বিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

শর্ত পূরণের পরও কেন যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দিচ্ছে না- এর পেছনে অন্য প্রতিযোগীদের নেতিবাচক প্রচারণা ও কারসাজি আছে কিনা, আমাদের দুর্বলতা বা প্রয়োজনীয় যোগাযোগের ঘাটতি কতটুকু এসব খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া দরকার। আশার কথা, মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছেন, জিএসপি ইস্যুতে চিঠি দিয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।

এখন দায়িত্বশীলদের উচিত প্রয়োজনীয় চেষ্টা-তদবিরের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের শিথিলতা প্রদর্শন না করা এবং এ ব্যাপারে জোর উদ্যোগ নেয়া। এক্ষেত্রে আমাদের সবচেয়ে বড় রফতানি খাত আরএমজিকে জিএসপি সুবিধার অন্তর্ভুক্ত করার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here