Home Bangla Recent বস্ত্রশিল্পে বিনিয়োগে স্থবিরতা

বস্ত্রশিল্পে বিনিয়োগে স্থবিরতা

textiles

নানা সংকটে বিনিয়োগে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে দেশের বস্ত্রশিল্পে। স্থবিরতা কাটাতে আসন্ন বাজেটে এই খাতের বিশেষ প্রণোদনার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানিকৃত সুতা ও কাপড়ে দেশের বাজার সয়লাব হয়ে আছে। যার কারণে দেশীয় উদ্যোক্তারা তাদের কারখানার উৎপাদিত সুতা বিক্রি করতে পারছেন না। ফলে এ খাতে ব্যাপক তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া গ্যাস, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব, দুই অঙ্কের ব্যাংক ঋণের সুদহার, জমির উচ্চ মূল্য এ শিল্পের বিকাশে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক উৎপাদনে ব্যবহার করা সুতা কিংবা কাপড় আমদানিতে কোনো ধরনের শুল্ক দিতে হয় না। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে বন্ড লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোই শুল্কমুক্ত এই আমদানির সুবিধা পায়। এর বাইরে দেশীয় বাজারের জন্য বাণিজ্যিক উদ্দেশে সুতা-কাপড় আমদানিতে গড়ে ৬২ শতাংশ শুল্কারোপ রয়েছে। বন্ড লাইসেন্স অপব্যবহারের মাধ্যমে এই পরিমাণ শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বাজার দখলে নিয়েছে অবৈধ সুতা এবং কাপড়। এতে একদিকে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। অন্যদিকে বিপর্যয়ের কবলে পড়ছে দেশীয় বস্ত্রশিল্প।

বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএ সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় বাজারের জন্য উৎপাদিত সুতা-কাপড় অবিক্রীত পড়ে আছে গুদামে। অবিক্রীত এই দুই পণ্যের দাম অন্তত ১৫ হাজার কোটি টাকা। দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলার কারণে বাধ্য হয়ে এখন উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে সুতা-কাপড় বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন উদ্যোক্তারা। উদ্যেক্তারা তাদের মিলের সক্ষমতার মাত্র ৪০ শতাংশ ব্যবহার করছেন। সাধারণত স্থানীয় বাজারের জন্য ঈদের আগের তিন মাসকে ভরা মৌসুম হিসেবে ধরা হয়। আসছে ঈদ সামনে রেখে এ অবস্থা এখন চরম আকার নিয়েছে। ফলে বিদেশি অবৈধ সুতা-কাপড়ের দাপটে মার খাচ্ছে দেশীয় তাঁত ও বস্ত্রশিল্প। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বাজেটে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানিকৃত সুতা খোলাবাজারে বিক্রি ঠেকাতে বিশেষ ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছে বিটিএমএ।

রপ্তানিমুখী পোশাক উৎপাদনে প্রয়োজনীয় বস্ত্রের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে ১৭ কোটি মানুষের বস্ত্রের চাহিদা পূরণ করে আসছে বিটিএমএর কারখানাগুলো। জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উদ্যোক্তা বলেন, শুল্কমুক্ত আমদানি সুবিধার অপব্যবহারের কারণে দেশে এক লাখের মতো তাঁতের মধ্যে অন্তত ৬০ শতাংশ এখন বন্ধ। রপ্তানিমুখী সুতা এবং কাপড় উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত মিলগুলোও চোরাইপথে আমদানি করা সুতার কারসাজিতে বিপদে পড়েছে। এসব কারণে উৎপাদন ক্ষমতার ৬০ শতাংশ কমিয়ে নিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে সংশ্লিষ্ট মিলগুলো।

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বাজেটে নতুন করে সুতা আমদানিতে শুল্কারোপের দাবি সংশ্লিষ্টদের। একই সঙ্গে বন্ডেড সুতা খোলাবাজারে বিক্রি ঠেকাতে এনবিআরকে আরো কঠোর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান তারা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here