Home Apparel বিজিএমইএ’র নগদ সহায়তা; তেলা মাথায় তেল

বিজিএমইএ’র নগদ সহায়তা; তেলা মাথায় তেল

তৈরি পোশাক রপ্তানির ওপর রপ্তানিকারকরা বছরের পর বছর নগদ সহায়তা পেয়ে আসছেন। এখন তাদের দাবি, আরও এক শতাংশ বিশেষ নগদ সহায়তা দিতে হবে। এই বিষয়ে বাংলাদেশ গার্মেন্ট মেনুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) প্রধানমন্ত্রীর মৌখিক সম্মতিও আদায় করে নিয়েছে বলে দাবি করছে। এখন তারা চায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন।

উলেস্নখ্য, বর্তমানে পোশাক খাতে চার ধরনের নগদ প্রণোদনা দেওয়া হয়। রপ্তানিমুখী দেশীয় বস্ত্র খাতে শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্র-ব্যাকের পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা বাবদ ৪ শতাংশ প্রণোদনা, বস্ত্র খাতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের অতিরিক্ত সুবিধা (প্রচলিত নিয়মের) বাবদ ৪ শতাংশ নগদ প্রণোদনা, নতুন পণ্য/নতুন বাজার (বস্ত্র খাত) সম্প্রসারণ সহায়তা (আমেরিকা/কানাডা/ইইউ ছাড়া) বাবদও ৪ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ইউরো জোনে বস্ত্র খাতের রপ্তানিকারকদের জন্য (বিদ্যমান ৪ শতাংশের অতিরিক্ত) ২ শতাংশ দেওয়া হচ্ছে।

এখন বিজিএমইএ চলতি অর্থবছর থেকে আরও এক শতাংশ নগদ সহায়তা চায়। তাদের যুক্তি, নূ্যনতম মজুরি বৃদ্ধি এবং ডলারের বিপরীতে টাকার শক্তিশালী অবস্থানের ফলে শিল্প কারখানাগুলো প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখতে পারছে না। তাই আপৎকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সকল তৈরি পোশাক কারখানার জন্য এই বিশেষ নগদ সহায়তা প্রদান করা হোক।

সূত্র জানায়, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে পোশাক খাতের জন্য অর্থমন্ত্রণালয় একটি থোক বরাদ্দ রেখেছে। যার পরিমাণ দুই হাজার ৮২৫ কোটি টাকা। তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা চাচ্ছেন এই অর্থ আদায় করে নিতে। ফলে এই বিষয়ে তারা সব ধরনের তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন।

জানা গেছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সাথে বিজিএমইএ পরিচালনা পর্ষদের সাক্ষাৎ হয়। এই সময় পোশাক খাতে এক শতাংশ বিশেষ নগদ সহায়তার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রী ইতিপূর্বে সকল তৈরি পোশাক রপ্তানির ওপর এক শতাংশ নগদ সহায়তা প্রদানের বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করেছেন বলে তাদের জানান এবং কোনো প্রকার শর্ত ছাড়া সকল তৈরি পোশাক রপ্তানির ওপর এক শতাংশ নগদ সহায়তা প্রদানের পক্ষে তার সম্মতির কথা জানান। এরপর বিজিএমইএ অর্থমন্ত্রী বরাবর এক চিঠিতে বলেছে, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় অনুযায়ী বিদ্যমান নগদ প্রণোদনাসহ সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধার অতিরিক্ত হিসেবে সকল তৈরি পোশাক রপ্তানিতে (বিশেষায়িত অঞ্চলে অবস্থিত ‘সি’ ক্যাটাগরির প্রতিষ্ঠানসহ) রপ্তানি মূল্যের (এফওবি) এক শতাংশ হারে বিশেষ নগদ সহায়তা প্রদানের বিষয়টি আপনার সদয় বিবেচনার জন্য অনুরোধ করা হলো।’

এ ব্যাপারে জানতে বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, তিনি এই মুহূর্তে নিউইয়র্কে আছেন। এখন একটা মিটিংয়ে আছেন। আগামী ২৯ তারিখ দেশে ফিরবেন তখন কথা হবে।

উলেস্নখ্য, সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ শিরোনামে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গত ১৩ জুন চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের দেওয়া বাজেট বলেছেন, ‘আমাদের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে পৃথিবীতে আমরা দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছি। বর্তমান বৈশ্বিক বাণিজ্যের প্রেক্ষাপটে এ খাতটিও একটি বিকাশমান ও সম্ভাবনাময় খাত। এ বিবেচনায় আমাদের সরকার এই খাতটির জন্য বিদ্যমান নগদ সহায়তাসহ সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত রেখেছে।’

সূত্র মতে, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৪ বিলিয়ন বা পাঁচ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৪ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে এবার ১০ বিলিয়ন ডলার বেশি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। গত বছর রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এর মধ্যে তৈরি পোশাক খাতেই হয়েছে ১১ দশমিক ৪৯ শতাংশ। রপ্তানির এ ধারা অব্যাহত রাখতে সরকার তৈরি পোশাক খাতকে আরও উৎসাহী করতে চায়। এ জন্য যারা তৈরি পোশাক রপ্তানিতে কোনো সুবিধা পায় না তাদের জন্য আরও এক শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত চায় বিজিএমইএ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here