বাংলাদেশের পোশাক খাতের নিরাপত্তা উন্নয়নে দুই ক্রেতা জোট ইউরোপের অ্যাকর্ড এবং উত্তর আমেরিকার অ্যালায়েন্সের নিরাপত্তা মানদণ্ড পুরোপুরি সঠিক ছিল না বলে মনে করেন বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক। জোট দুটির নিরাপত্তা মানদণ্ড নির্ধারণে আন্তর্জাতিক বিষয়াদি বিবেচনায় নেওয়া হলেও জাতীয় প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। এ কারণে অনেক সমস্যা তৈরি হয়েছে। কেবল অগ্নিনির্বাপণের নামে দেড় বিলিয়ন ডলার বা ১২ হাজার কোটি টাকা গচ্চা গেছে।
বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) পোশাক খাতের ওপর একটি গবেষণা কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো. নূরুল আমিনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। আব্দুল মান্নান বলেন, অর্থনীতিকে রক্ষা করা আর নিজেদের বাঁচার জন্য পোশাক খাতের ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা প্রয়োজন।
বিজিএমইএ সভাপতি আরও বলেন, এখন অ্যাকর্ড-অ্যালায়েন্সের সঙ্গে ঝগড়া করতে হচ্ছে। সংস্কার কার্যক্রমের আটটি কারিগরি ইস্যু নিয়ে ঝগড়ার পর অবশেষে সাতটি ঠিক হয়েছে। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে কারখানা উদ্যোক্তাদের অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র (ফায়ার অ্যালার্ম) স্থাপনে বাধ্য করা হয়েছে। এখন দেখা গেল তা আর্দ্রতার সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ নয়। এই ফায়ার অ্যালার্ম কাজ করে না। এজন্য ব্যয় করতে হয়েছে দেড় বিলিয়ন ডলার। এটা মশকরা ছাড়া কিছুই নয়। পোশাক খাতের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ তুলে ধরে ড. রুবানা বলেন, পোশাক রপ্তানি থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ৫০ বিলিয়ন ডলার আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা, তা অর্জন করা সম্ভব হবে না। এ ধরনের লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে তিনি বলেন, মূল্য সংযোজন না করে রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের মধ্যে কোনো বিশেষত্ব নেই।
যে কোনো ধরনের দৈব দুর্বিপাকের ক্ষেত্রে পোশাক খাতের সরবরাহ চেইন স্বাভাবিক রাখা এবং এ খাতের সক্ষমতা ধরে রাখার ওপর গবেষণা কার্যক্রমটি পরিচালনা করবে পরিকল্পনা কমিশনের ন্যাশনাল রেজিলিয়েন্স প্রোগ্রাম (এনআরপি)। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউএনডিপির সহকারী প্রতিনিধি খুরশিদ আলম, এনআরপির প্রকল্প পরিচালক নুরন নাহার, বিজিএমইএর সহসভাপতি আসিফ ইব্রাহীম প্রমুখ।