Home Apparel ইপিজেডের কারখানায় সাব-কন্ট্রাক্টের শর্ত শিথিল চায় পোশাক খাত

ইপিজেডের কারখানায় সাব-কন্ট্রাক্টের শর্ত শিথিল চায় পোশাক খাত

রফতানিমুখী শিল্প প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের জন্য দেশে রয়েছে আটটি রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড)। এ অঞ্চলের কারখানাগুলোর সঙ্গে ইপিজেডের বাইরের কারখানাগুলোর মধ্যে সাব-কন্ট্রাক্ট পদ্ধতিতে কাজ হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে কিছু শর্ত পরিপালন করতে হয়। এসব শর্ত শিথিল করার অনুরোধ জানিয়েছে পোশাক খাতসংশ্লিষ্ট মালিক সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)।

বিজিএমইএ নেতারা সম্প্রতি শুল্ক ও বন্ড-সংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যুতে জটিলতা নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে আলোচনায় মিলিত হন। সভায় ইপিজেডের কারখানাগুলোর সঙ্গে ইপিজেডের বাইরের কারখানাগুলোর সাব-কন্ট্রাক্ট পদ্ধতির শর্ত জটিলতার বিষয়টি উত্থাপন করা হয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে শর্ত শিথিলের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন এনবিআর প্রতিনিধিরা।

জানা গেছে, রফতানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ইপিজেডের প্রতিষ্ঠানের সাব-কন্ট্রাক্ট, কুইলটিং, স্টোনওয়াশ, ফ্যাব্রিক্স রি-প্রসেসিং, তৈরি পোশাকে আইলেট সংযোজন, এমব্রয়ডারি, প্রিন্টিংসহ নানাবিধ কাজ সম্পাদনের জন্য অস্থায়ী বন্ড অনুমোদন নিতে হয়, যা প্রদান করে বন্ড কমিশনারেট।

এ অনুমোদনপ্রাপ্তির শর্তপূরণ ও নিয়মকানুন প্রতিপালন করা সময়সাপেক্ষ এবং জটিল বলে দাবি করছেন পোশাক খাতসংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, বিদেশী ক্রেতা নির্ধারিত লিড টাইমের মধ্যে পোশাক রফতানির লক্ষ্যে দ্রুত কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন দ্রুততার সঙ্গে দেয়া প্রয়োজন।

খাতসংশ্লিষ্টদের দাবি, ইপিজেডের বাইরে দুটি বন্ডের প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সাব-কন্ট্রাক্ট কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য ইন্টার-বন্ড জারির ক্ষমতা বিজিএমইএকে দেয়া আছে, যা পরিপালনও হচ্ছে যথাযথভাবে। এদিকে ইপিজেডের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাইরের প্রতিষ্ঠানের অস্থায়ী আন্তঃবন্ডের অনুমোদন বর্তমানে সংশ্লিষ্ট বন্ড কমিশনারেট থেকে দেয়া হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে রফতানি কার্যক্রমে গতি আনার জন্য ইপিজেডের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ইপিজেডের বাইরের বন্ডেড প্রতিষ্ঠানের সাব-কন্ট্রাক্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পাদনের অনুমোদনের ক্ষমতা সংগঠনকে দেয়া যেতে পারে বলে মনে করছে বিজিএমইএ।

১৪ ডিসেম্বর এনবিআর চেয়ারম্যান বরাবর একটি চিঠি দেন বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক। সেখানে তিনি বলেন, সম্প্রতি আপনার দপ্তরের মাধ্যমে ইপিজেডের ভেতরে সহযোগী প্রতিষ্ঠানে সাব-কন্ট্রাক্ট করার জন্য অনুমোদনের ক্ষেত্রে কিছু শর্ত আরোপ করা হয়েছে, যা তৈরি পোশাক রফতানি বাণিজ্যকে জটিল করবে বলে আমরা মনে করি। রফতানির বৃহৎ স্বার্থে রফতানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের কার্যক্রমকে সহজীকরণের জন্য ইপিজেডে অবস্থিত প্রতিষ্ঠানের সাব-কন্ট্রাক্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পাদনের ক্ষেত্রে আরোপিত শর্ত প্রয়োগ না করা এবং প্রয়োজনে বিজিএমইএকে ইপিজেডের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ইপিজেডের বাইরের প্রতিষ্ঠানের ইন্টার-বন্ডসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পাদনের অনুমোদনের ক্ষমতা প্রদান করার জন্য আপনাকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে।

গত সেপ্টেম্বর থেকে গতকাল পর্যন্ত ইপিজেডের কারখানার সঙ্গে সাব-কন্ট্রাক্টসংক্রান্ত বিষয়সহ আরো কিছু বিষয়ে এনবিআরের সহযোগিতা চেয়েছে বিজিএমইএ। এর মধ্যে আছে শুল্কমুক্ত/রেয়াতি হারে র্যাকিং সিস্টেম আমদানি করার অনুমতি। আধুনিক বন্ডেড ওয়্যারহাউজ উন্নয়নে র্যাকিং সিস্টেম স্থাপন করা হয়। এ ব্যবস্থায় বন্ডেড ওয়্যারহাউজের অভ্যন্তরে অল্প জায়গায় অধিক সংখ্যক পণ্য পৃথক পৃথক করে গুদামজাত করা সম্ভব হয় এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে পণ্য খুঁজে পাওয়া যায়।

বর্তমানে র্যাকিং সিস্টেম আমদানিতে ৫৮ দশমিক ৬০ শতাংশ শুল্ক পরিশোধ করতে হয়, যা প্রদান করে আমদানি করা প্রায় অসম্ভব বলে জানিয়েছে বিজিএমইএ। এ পরিপ্রেক্ষিতে শুল্কমুক্ত/রেয়াতি হারে র্যাকিং সিস্টেম আমদানিরও অনুমতি চেয়েছে সংগঠনটি। এছাড়া পোশাক শিল্পের জন্য আমদানীকৃত সুতার কাউন্ট ও কম্পোজিশনে অনিচ্ছাকৃত

ত্রুটি-বিচ্যুতির ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্যতার সীমা বৃদ্ধির দাবিও জানানো হয়েছে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে। এসব বিষয়ে এনবিআরের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া দেয়া হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here