পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে নাজুক অবস্থানে রয়েছে বস্ত্র খাতে ১৫টি। বছর শেষে শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ না দেয়ায় এই কোম্পানিগুলোকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিভুক্ত করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি)। এতে বিপাকে পড়েছেন এই খাতের বিনিয়োগকারীরা। নতুন করে বস্ত্র খাতের ১৫ কোম্পানিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিভুক্ত করায় এই ক্যাটাগরিভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা দাঁড়াল ৫০ তে। বস্ত্রখাতের ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে থাকা ১৫ কোম্পানিগুলো হলো- আলহাজ টেক্সটাইল মিলস, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, সিএ্যান্ডএ টেক্সটাইল, দ্য ঢাকা ডাইং, ডেল্টা স্পিনার্স, দুলামিয়া কটন এ্যান্ড স্পিনিং মিলস, ফ্যামিলি টেক্স বিডি, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন, কেয়া কসমেটিক, মিথুন নিটিং এ্যান্ড ডাইং, আরএন স্পিনিং মিলস, সাফকো স্পিনিংস মিলস, তাল্লু স্পিনিং মিলস, তুং হাই নিটিং ও জাহিনটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ। সূত্র জানায়, তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানি নিয়মিত বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করে না সেসব কোম্পানিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এছাড়া শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ না দিলেও ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে ফেলা হয়। এদিকে বস্ত্র খাতে ৫৬ কোম্পানিগুলোর মধ্যে অভিহিত মূল্যের নিচে রয়েছে ২৪টি বা ৪২ শতাংশ কোম্পানি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্যপরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, অনেক কোম্পানির আর্থিক অবস্থা খারাপ। তাই উৎপাদন বন্ধ। ফলে তারা বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিতে পারছে না। আবার অনেক কোম্পানি উৎপাদনে থাকার পরও কারসাজি করেই লভ্যাংশ দিচ্ছে না। একে সার্বিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। কাজী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এছাড়া ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোতে প্রায় সারা বছরই কারসাজিকারীদের উপস্থিতিও বেশি দেখা যায়। এ জন্য ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোর ওপর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিশেষ নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন। এই ধরনের খারাপ কোম্পানি যেন পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত না হতে পারে সে জন্য বিএসইসিকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান আব্দুর রাজ্জাক। বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে ১ বছর বা এর বেশি সময় ধরে অবস্থানরত কোম্পানিগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করেবি বিএসইসি। ওই কমিটি ‘জেড’ ক্যাটাগরি নিয়ে ২০০২ সালের বিএসইসি’র জারি করা নোটিফিকেশনের ওপর ভিত্তি করে প্রয়োজনীয় সুপারিশ তৈরি করছে। এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ‘জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ারে বিনিয়োগ ঝুঁকিপূর্ণ। বিনিয়োগকারীরা সব কিছু জেনে-শুনে কেবল মুনাফার আশায় সেখাতে বিনিয়োগ করেন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হন। তবে, কী কারণে এসব কোম্পানি ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে চলে যাচ্ছে, তা বিশদভাবে খতিয়ে দেখা উচিত। জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলোর ওপর বিএসইসির নজর রয়েছে। কোন অসঙ্গতি পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।