কভিড-১৯-এর ধাক্কা সামলে চলতি অর্থবছরের টানা তিন মাস দেশের রপ্তানি আয় বেড়েছে। জুলাইয়ে ৩৯১ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। আগস্টে তা কিছুটা কমলেও সেপ্টেম্বরে আবার ৩০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। তিন মাসে মোট ৯৮৯ কোটি ডলারের বেশি পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২.৪৫ শতাংশ এবং গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২.৫৮ শতাংশ বেশি। গতকাল সোমবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ৯৮৯ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯৬৬ কোটি ডলার। সর্বশেষ সেপ্টেম্বরে রপ্তানি হয়েছে ৩০১ কোটি ডলারের পণ্য। এই আয় গত বছরের একই সময়ের ২৯১ কোটি ডলারের তুলনায় ৩.৫৩ শতাংশ বেশি। দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক রপ্তানিতে দেখা যায়, গত তিন মাসে মোট পণ্য রপ্তানির ৮২ শতাংশই পোশাক খাত থেকে এসেছে। রপ্তানির পরিমাণ ৮১২ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২.৯ শতাংশ এবং গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ০.৮৫ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে ওভেন পোশাকে রপ্তানি কমলেও জুলাই-সেপ্টেম্বরে নিট পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে ৭ শতাংশ, তবে ওভেন পোশাকে কমেছে ৫.৭৮ শতাংশ। এ সময় ওভেন পোশাকে আয় হয়েছে ৩৬৬ কোটি ২৭ লাখ ডলার আর নিট পোশাকে আয় হয়েছে ৪৪৬ কোটি ৩৬ লাখ ডলার। এ ছাড়া অন্য যেসব পণ্যে আয় বেড়েছে তার মধ্যে পাট ও পাটজাত পণ্যে আয় হয়েছে ৩০ কোটি ৭৫ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৯.২৬ শতাংশ, পাটের সুতায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫৩.৬৪ শতাংশ। হোম টেক্সটাইলে আয় হয়েছে ২৫ কোটি ২৩ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪০.৭৪ শতাংশ। হিমায়িত ও জীবন্ত মাছ রপ্তানিতে আয় হয়েছে ১৩ কোটি ১৬ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫.১১ শতাংশ। ওষুধ রপ্তানিতে আয় হয়েছে চার কোটি ২১ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২০.৯০ শতাংশ। এ ছাড়া আয় কমেছে চিংড়ি মাছ, শাক-সবজি, সিরামিক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, প্লাস্টিক, আসবাব ইত্যাদি পণ্যে। এ বিষয়ে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও এফবিসিসিআই সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, কভিডের প্রভাবে স্থগিত হওয়া পণ্য প্রতি মাসেই কিছু না কিছু রপ্তানি হচ্ছে। একই সঙ্গে নতুন পণ্য। ফলে এ সময় রপ্তানি কম হওয়ার মৌসুম হলেও রপ্তানি বাড়ছে। এ ছাড়া আগের স্থগিত হওয়া ৩০০ কোটি ডলারের বেশি পণ্যের ৮০ শতাংশই এরই মধ্যে ধীরে ধীরে রপ্তানি হয়েছে। তিনি আশা করছেন, আগামী মাসগুলোতে এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে, যদি দ্বিতীয় দফায় করোনায় ইউরোপ ও আমেরিকা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।