বেনাপোল বন্দর দিয়ে আজ সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃক হয়রানি বন্ধসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ভারতের পেট্রাপোল বন্দর জীবন-জীবিকা বাঁচাও কমিটি এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ থাকলেও দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত স্বাভাবিক রয়েছে। বন্দরে মালামাল ওঠানামাসহ পণ্য ডেলিভারিও রয়েছে স্বাভাবিক। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ থাকায় দুই দেশের বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় আটকা পড়েছে শত শত পণ্য বোঝাই ট্রাক। ফলে ব্যবসায়ীরা বড় ধরনের লোকসানের কবলে পড়েছেন। আটকে পড়া পণ্যের মধ্যে রয়েছে রপ্তানিমুখী পাট ও পাটজাত দ্রব্য, মাছ, শিল্প কলকারখানার কাঁচামাল, তৈরি পোশাক, মেশিনারিজসহ বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারত থেকে প্রায় পাঁচ শতাধিক বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি ও ২৫০ ট্রাক পণ্য রপ্তানি হয় ভারতে। ভারতীয় পেট্রাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চন্দ্র জানান, আমদানি-বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালু করতে গতকাল ও আজ বিএসএফসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক চলছে। ভারতীয় সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ সদস্য ও ট্রাক শ্রমিকরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে বেনাপোল বন্দরে আসা-যাওয়া করছেন দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু, সীমান্তরক্ষী বিএসএফ সম্প্রতি নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে তাদের যাতায়াত বন্ধ করে দেয়। তা ছাড়া, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই বিএসএফ ট্রাক তল্লাশি করায় দীর্ঘ সময় ক্ষেপণ হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানে আন্তরিক হতে বিএসএফকে বারবার জানানো সত্ত্বেও সমাধান না হওয়ায় বাধ্য হয়ে বন্দর জীবন-জীবিকা বাঁচাও সংগঠনটি লাগাতার ধর্মঘটের ডাক দেয়। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ভারতীয় শ্রমিকরা দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ করে দিলেও বেনাপোল বন্দরে মালামাল ডেলিভারি চলছে স্বাভাবিক নিয়মে। তবে, ভারত থেকে বন্ধ থাকায় প্রতিদিন সরকার ২০ কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার আজিজুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে বছরে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য সম্পন্ন হয়ে থাকে। প্রতিদিন প্রায় এক হাজার সাত শ কোটি টাকার রাজস্ব আয় হয়ে থাকে বেনাপোল কাস্টমস হাউসে।’ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চলতি অর্থবছরে বেনাপোল বন্দর থেকে পাঁচ হাজার পাঁচ শ কোটি টাকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।