তৈরি পোশাক কারখানার নারী শ্রমিকদের পূর্ণ বেতনে ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত করাসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছে ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিল (আইবিসি)।রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ‘আএলও কনভেনশন-১৯০ অনুস্বাক্ষর কর’ শিরোনামে আলোচনা সভায় এসব দাবি তোলা হয়।সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান বলেন, “নারীর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। নারীর ক্ষমতায় সমতা এবং উন্নয়নের মূলধারার পূর্ণ অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে হবে।”আইবিসি নারী কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামিমা আক্তার বলেন, নারী শ্রমিকদের প্রতি শোষণ, নির্যাতন, হয়রানি ও সহিংসতামুক্ত ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে নারী-পুরুষদের সমতা আনা এবং নারীর অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করাই আন্তর্জাতিক নারী দিবসের চ্যালেঞ্জ।কারখানায় নারীরা হয়রানি, অত্যাচার, যৌন নির্যাতনের শিকারই শুধু নয়, প্রাপ্য অধিকার থেকেও বঞ্চিত হয়ে আসছেন বলে সভায় বক্তারা তুলে ধরেন।ফাইল ছবিফাইল ছবিঅনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সরবরাহ করা লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, তৈরি পোশাক কারখানায় কর্মরত নারীরা মাতৃত্বকালীন ছুটি পায় চার মাস, অথচ সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নারীরা পাচ্ছে ছয় মাসের। নারী শ্রমিকদের গর্ভধারণের খবর মালিকের নিকট পৌঁছার সাথে সাথে নারী শ্রমিকদের চাকরিচ্যুতির হুমকিতে পড়তে হয়। কোনো অর্থিক সুবিধা ছাড়াই গর্ভধারী নারী শ্রমিককে বের করে দেওয়া হয়।“রাত ১০টার পর কোনো নারী শ্রমিকদের দ্বারা কাজ করানো যাবে না। সরকারি এ নির্দেশনা থাকার পরেও জোরপূর্বক দিন-রাত বিরতিহীনভাবে কাজ করানো হয়। সে তুলনায় তাদের মজুরি ও খাওয়ার সুব্যবস্থা মালিক পক্ষ করে না।”নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত ও ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি ছাড়া সংগঠনের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে- সরকার কর্তৃক আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুস্বাক্ষর/অনুমোদন করা, ট্রেড ইউনিয়নের প্রতিটি স্তরে ৪০ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, নারী শ্রমিকদের প্রতি অসম্মানজনক আচরণ ও যৌন হয়রানি বন্ধ করা।এছাড়া নারী শ্রমিকদের জন্য প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্রাচ্যুইটিসহ সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সরকারি নির্দেশ মোতাবেক কোনো নারী শ্রমিককে রাত ১০টা পর কোনো কাজ না করানো, প্রতিটি কারখানায় শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র থাকতে হবে এবং শিশুদের জন্য সুষম খাদ্য ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা, নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করা, কর্মজীবি নারীদের সন্তানদের জন্য সরকারি/কোম্পানির নিজ খরচায় লেখাপড়ার সুযোগসহ মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপের ব্যবস্থা করা, সকল কারখানায় আইএলও কনভেশন ৮৭ ও ৯৮ মোতাবেক গণতান্ত্রিক ট্রেড ইউনিয়ন গঠনসহ ফ্রিডম-অব-অ্যাসোসিয়েশন নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়।আইবিসি নারী কমিটির সভাপতি হাসিনা আক্তারের সভাপতিত্বে সভায় সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সালাউদ্দিন স্বপন, সংগঠনের যুব কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাসান আলীসহ অন্যান্য বক্তব্য দেন।