কঠোর লকডাউনের নিয়ম অমান্য করে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি রপ্তানিমুখী পোষাক কারখানার টেক্সটাইল ও ডাইং বিভাগ খোলা রেখেছে মালিকপক্ষ। অভিযোগ উঠেছে ওই বিভাগে দুই শিফটে প্রায় ১৮০০ শ্রমিককে জোর করে কাজ করানো হচ্ছে।
ফতুল্লার শাসনগাঁও এলাকায় অবস্থিত বিসিক শিল্পনগরীর ফকির অ্যাপারেলসের বিরুদ্ধে শ্রমিকরা এমন অভিযোগ করেছে। এছাড়াও শ্রমিকদের অভিযোগ বিভিন্ন পোষাক কারখানা শ্রমিকদের জোর করে কাজ করাচ্ছে। অনেকে চাকরি হারানোর ভয়ে সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে জীবন বাজি রেখে কাজে যোগ দিতে হচ্ছে। তবে শ্রমিকদের এ অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেছে মালিকপক্ষ ও বিকেএমইএ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রমিকরা জানান, বিসিকের ফকির অ্যাপারেলস শুধু ঈদের দিন বন্ধ রাখা হয়েছে। এর পরের দিন থেকে টেক্সটাইল ও ডাইং বিভাগ চালু রাখা হয়। এ বিষয়ে কয়েকজন শ্রমিক প্রতিবাদ জানালে তাৎক্ষণিক তাদের পাওনা দিয়ে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। এতে ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে পারছে না। ওই দুটি বিভাগে কোন স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। শ্রমিকদের দুপুরে ও রাতে কারখানার ভিতরেই খাবার দেওয়া হচ্ছে। সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এক শিফট এবং সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত আরেক শিফট কাজ চলে। কাজ শেষে একজন করে ধীরে ধীরে সকল শ্রমিককে কারখানা থেকে বের করে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে ফকির অ্যাপারেলসের টেক্সটাইল ইউনিটের এইচ আর এডমিন মোশারফ হোসেন বলেন, আমাদের কারখানা বন্ধ। কেউ তথ্য দিলে সে মিথ্যা বলেছে।
মালিকপক্ষের এ দাবি প্রত্যাখান করে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি এমএ শাহীন বলেন, লকডাউনের বিধি নিষেধে সকল শিল্প কারখানা বন্ধ রাখার নির্দেশনা থাকলেও প্রথম দিনেই বিধিনিষেধ অমান্য করেছে ফকির অ্যপারেলসের মালিক পক্ষ। তারা সরকারি সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কারখানার টেক্সটাইল ইউনিট খোলা রেখেছে। তিনি আরো বলেন, শ্রমিকরা আমাকে জানিয়েছে তাদেরকে চাকুরিচ্যুতির ভয় দেখিয়ে কাজে যোগদান করতে বাধ্য করেছে। সরকারি বিধি নিষেধের মধ্যে কারখানা খোলা রাখার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। রাষ্ট্রীয় নির্দেশনা ভঙ্গকারী মালিকের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে শাস্তি প্রদানসহ কারখানাটির উৎপাদন বন্ধ করার অনুরোধ জানান তিনি।