বেসরকারি ডিপোগুলোয় রপ্তানি পণ্যের জট কমাতে বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর ও বন্দর ব্যবহারকারীরা। ঢাকায় সচিবালয়ে গতকাল বুধবার নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘চট্টগ্রাম বন্দরে রপ্তানিপণ্য জাহাজীকরণ’–সংক্রান্ত এক ভার্চ্যুয়াল সভায় এসব প্রস্তাব দেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রপ্তানি পণ্য সিঙ্গাপুর ও কলম্বো বন্দর হয়ে ইউরোপ-আমেরিকায় পাঠানো হয়। কিন্তু ইউরোপ-আমেরিকাগামী জাহাজে বুকিং না পাওয়ায় চট্টগ্রামের ১৯টি ডিপোয় এখন রপ্তানি পণ্যের স্তূপ জমে যাচ্ছে। গতকাল ডিপোতে পড়ে থাকা রপ্তানি পণ্যভর্তি একক কনটেইনারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৮২৮। করোনার প্রভাবে কনটেইনার পরিবহনে বিশ্বব্যাপী সংকট তৈরি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ব্যবহারকারীদের সঙ্গে বৈঠক করে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।
সাধারণত রপ্তানিকারকেরা কারখানা থেকে রপ্তানি পণ্য বেসরকারি ডিপোতে নিয়ে যান। সেখানে তাঁরা বিদেশি ক্রেতাদের মনোনীত প্রতিনিধি, অর্থাৎ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডারদের হাতে পণ্য বুঝিয়ে দেন। এই মনোনীত প্রতিনিধিরা তাঁদের সঙ্গে যেসব শিপিং কোম্পানির চুক্তি আছে, সেগুলোর কনটেইনারে রপ্তানি পণ্য বোঝাই করে বিদেশি ক্রেতার কাছে পাঠান। গতকাল বৈঠকে বলা হয়, সংকট এড়াতে বিদেশি ক্রেতার সঙ্গে আলোচনা করে যেসব শিপিং কোম্পানি দ্রুত পণ্য পরিবহনে সক্ষম, সেগুলোর মাধ্যমেই যাতে পরিবহন করা হয়, তা নিশ্চিত করা যেতে পারে।
বৈঠকে বর্তমান সংকটের পরিস্থিতিতে শিপিং কোম্পানিগুলোর নিজেদের মধ্যে চুক্তি করে পরস্পরের কনটেইনারও পরিবহনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। অর্থাৎ শিপিং কোম্পানিগুলো যাতে নিজেদের জাহাজে অন্য কোম্পানির কনটেইনার পরিবহন করতে পারে, তা নিশ্চিত করা। ফ্রেইট ফরোয়ার্ডাররা বেসরকারি ডিপোতে ‘কার্গো প্ল্যান’ দেরিতে না দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়। এ ছাড়া বেসরকারি ডিপোর সংখ্যা বাড়ানোর কথাও বলা হয়।
বর্তমান বৈশ্বিক সংকটের সময় চট্টগ্রাম বন্দরের চিত্র তুলে ধরে নৌপরিবহনসচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী অবশ্য বলেন, এ বন্দর থেকে পণ্য পরিবহনের জাহাজ ও খালি কনটেইনারের সংকট নেই।
বৈঠকে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান, বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান, বিকেএমইএর সহসভাপতি মো. হাতেম, চট্টগ্রাম চেম্বারের সহসভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কবির আহমেদ, কনটেইনার ডিপো মালিক সমিতির সভাপতি নূরূল কাইয়ূম খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।