Home বাংলা নিউজ পোশাক খাতে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে তুলার দর

পোশাক খাতে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে তুলার দর

আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দর কয়েক মাস ধরেই বাড়ছে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর তুলার দামের সূচক ১০০ পয়েন্টে পৌঁছায়। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার তা ১০৭ দশমিক ২৮ পয়েন্ট স্পর্শ করে। তুলার এ দর বৃদ্ধি গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।

তুলার দাম বাড়লে সুতার দাম বাড়ে। তুলার বর্তমান দরের বিবেচনায় দেশের স্পিনিং মিলে সুতার দাম অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ বাড়তে পারে। সুতার দাম বাড়লে তৈরি পোশাকের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। এতে বস্ত্র এবং তৈরি পোশাক খাতে উদ্বেগ বাড়ছে।

তুলার দরসম্পর্কিত তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, প্রতিবছরের অক্টোবরে তুলার দর বৃদ্ধির একটা প্রবণতা থাকে। ২০১২ সালের অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার সূচক ছিল ৭২ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট। পরের বছরের একই সময়ে ছিল ৮৭ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট। ২০১৪ সালের অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে সূচক কিছুটা কমে ৬২ দশমিক ৭১ পয়েন্ট ছিল। পরের বছরের একই সময়ে আরও কমে ৬১ দশমিক ২০ পয়েন্ট ছিল।

তুলার প্রধান ক্রেতা বস্ত্র খাত। আমদানি করা তুলায় সুতা তৈরি করে পোশাক উৎপাদন এবং রপ্তানিকারকদের কাছে প্রচ্ছন্ন রপ্তানি করে থাকেন বস্ত্র খাতের উদ্যোক্তারা। বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন গতকাল সমকালকে বলেন, লাফিয়ে লাফিয়ে তুলার দর বৃদ্ধির এ প্রবণতা মাথায় রেখে বিদেশি ব্র্যান্ড এবং ক্রেতাদের সঙ্গে দর কষাকষির অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

এর আগে গত আগস্টে সুতার দর বৃদ্ধি নিয়ে বস্ত্র এবং পোশাক দুই খাতের উদ্যোক্তাদের মধ্যে টানাপোড়েন তৈরি হয়। সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে যায় বিজিএমইএ এবং বিটিএমএ। ভারত থেকে স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির অনুমতি চায় বিজিএমইএ। ২১ আগস্ট বিটিএমএ, বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর মধ্যে সমঝোতা হয়। ত্রিপক্ষীয় ওই সমঝোতা অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দরের সূচক সর্বোচ্চ ১০০ এবং সর্বনিম্ন ৮৫ পয়েন্টের মধ্যে থাকলে দেশে সুতার দর বাড়বে না। তবে পয়েন্ট ১০০-এর ঘর অতিক্রম করলে বাড়বে। আবার ৮৫ পয়েন্টের নিচে নেমে এলে সুতার দর কমবে।

তুলার দর বৃদ্ধি এবং সমঝোতা চুক্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিকেএমইএর প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম সমকালকে বলেন, এ মুহূর্তে আবারও সুতার দর বাড়লে পোশাক খাতে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। কারণ, ক্রেতাদের সঙ্গে দরদাম আগেই নির্ধারণ করেছেন তারা। ত্রিপক্ষীয় সমঝোতার সিদ্ধান্ত বিটিএমএর সব মিল প্রতিপালন করেনি। কোনো কোনো মিল চুক্তির ব্যত্যয় করেছে। এর একটি তালিকা তারা বিটিএমএ সভাপতির কাছে পাঠিয়েছেন। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দর যতটুকু বাড়ছে, সে অনুপাতে সুতার দর বাড়ানোটাই ন্যায্য। কিন্তু বিটিএমএ সব সময়ই অতিরিক্ত বাড়িয়ে থাকে।

তুলার দর বৃদ্ধির প্রবণতা চলতে থাকলেও এখনই সুতার দর বাড়ানো হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বিটিএমএ সভাপতি। তিনি বলেন, অন্তত আরও দুই সপ্তাহ তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে চান। এ সময়ের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দর না কমলে দর বাড়াতে বাধ্য হবেন তারা। পোশাক খাতের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিটিএমএ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেই দর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মোহাম্মদ আলী জানান, কয়েক দিন ধরে তুলার দর বৃদ্ধির প্রবণতা বিটিএমএর পক্ষ থেকে বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ নেতাদের অবহিত করা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here