Home Blog

Bangladesh’s apparel exports to Saudi Arabia and Gulf Soar to new heights

Bangladesh’s garment industry is expanding its market reach beyond the traditional US and European markets, focusing on the Gulf region, including Saudi Arabia and the United Arab Emirates (UAE), which have seen a significant rise in garment exports in the last financial year.

Figure: Bangladesh’s apparel exports to Saudi Arabia and Gulf Soar to new heights.

The industry, which accounts for 80% of the country’s exports and employs four million people, has been hit by a decline in sales in traditional markets since Russia’s invasion of Ukraine, prompting a reorientation of the promotion strategy.

The country made $42.6 billion between July 2021-June 2022 from garment exports, with the EU and the US being the largest markets. The Bangladesh Garment Manufacturers and Exporters Association’s data reveals a surge in exports to the Gulf, with sales to Saudi Arabia rising by 40% to $125 million and to the UAE up by 21% to $183 million.

The country is positioning itself to capture the Middle East’s substantial apparel imports, with China and India being the major suppliers currently. The presence of a considerable number of Bangladeshi workers in the Gulf region presents another opportunity to promote and introduce Bangladeshi products.

RMG leaders seek stable power and energy supply, policy support to achieve $100b export target

In a bid to propel Bangladesh’s ready-made garments (RMG) exports to the $100 billion mark, industry leaders have urged the government to ensure uninterrupted power and energy supply, along with robust policy support and investment in manpower skill development.

Members of the Bangladesh Garment Manufacturers and Exporters Association’s (BGMEA) Sammilito Parishadm, one of the two panels vying for BGMEA leadership for the 2025-27 term in the upcoming election slated for later this month, made the call today (21 May) during a manifesto unveiling and introduction ceremony at a Dhaka hotel.

The election, scheduled for 28 May, will see BGMEA members voting to elect 35 directors who will steer the apex RMG trade body for the next three years.

Md Abul Kalam, owner of Chaiti Group and panel leader of Sammilita Parishad, unveiled a 12-point manifesto at the event, highlighting the challenges posed by ongoing power and energy crises, geopolitical tensions, and global economic uncertainty.

He emphasised that the sector is navigating one of its most difficult phases and needs urgent government intervention to remain competitive.

Addressing the programme, Abdullah Hil Rakib, managing director of TEAM group, said,

“Globally, man-made fibres account for 76% of the RMG trade. The market is huge. It holds big prospects for us. If we get policy support from the government to promote man-made fibre and a stable power and energy supply, there is an opportunity to reach $100 billion in RMG exports,” Rakib said.

Calling for the conversion of the country’s “cotton-focused economy” to a man-made fibre-based economy, he said, “Man-made fibre only covers 16% of the RMG production in Bangladesh, whereas 42% in China and 46% in Vietnam.”

Rakib criticised the Bankers Association of Bangladesh, accusing the organisation of charging “high interest rates”. “The way the Bankers Association slaughter us- we label it as working for ‘two Bs’. One for bankers, another for buyers.”

“We need an affordable interest rate and competitive RMG price from buyers,” he added.

Speaking about the recently unveiled US-led global tariff war, he said, “We are feeling threatened because of the tariff war. Where will our industry go if there is any obnoxious tariff appearing before us?”

Also addressing the event, former BGMEA president Faruk Hasan urged the government to defer the time of Least Developed Country (LDC) graduation and increase the transition period for several years.

“We still believe that, considering our export and financial condition, we should push back our LDC graduation for several years. We will get more benefits if the LDC graduation is delayed,” he said.

Speaking to The Business Standard after the event, Faruk Hasan said he wants the LDC graduation to be delayed till 2031-2032.

যুক্তরাষ্ট্রে সস্তা পোশাকে এগিয়ে চীন, বৈচিত্র্যে পিছিয়ে বাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এককভাবে পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষে রয়েছে চীন। চীনের বড় শক্তি সস্তা পোশাক আর পোশাকের বৈচিত্র্য। চীনের চেয়ে দামি পোশাক রপ্তানি করলেও শুধু বৈচিত্র্যের কারণে দ্বিতীয় অবস্থানে ভিয়েতনাম। যদিও চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে দেশটি চীনকে টপকে গেছে। বাংলাদেশের বড় শক্তি সুতার কাপড়ের পোশাক রপ্তানি। তবে তুলাবিহীন পোশাকে বৈচিত্র্য কম। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের মতো বড় বাজারে বাংলাদেশ ঘুরেফিরে তৃতীয় অবস্থানে আটকে আছে।

যুক্তরাষ্ট্র গত বছর বিশ্বের ২০০ দেশ থেকে ৮ হাজার ১৩২ কোটি ডলারের ৬৩৯ ক্যাটাগরি বা ধরনের পোশাক আমদানি করেছে। এর মধ্যে চীন সবচেয়ে কম দামে অর্থাৎ প্রতি পিস ২ দশমিক ৬২ মার্কিন ডলার দামে তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। তারপরই রয়েছে বাংলাদেশ, ৩ দশমিক ৯১ ডলার। সস্তা পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকলেও বৈচিত্র্যের ধরনে অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ। চীন ৬২৮টি, ভিয়েতনাম ৫২১ ও ভারত ৫৫৯ ধরনের পোশাক রপ্তানি করলেও বাংলাদেশ করেছে ৪৬১ ধরনের তৈরি পোশাক। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কমিশনের তথ্যভান্ডার থেকে এমন তথ্য মিলেছে।

বাণিজ্য–ঘাটতি কমাতে যুক্তরাষ্ট্র যেসব দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে, সেসব দেশের ওপর গত ২ এপ্রিল ন্যূনতম ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক বা রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ আরোপ করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ৫৭ দেশের ওপর বিভিন্ন হারে বাড়তি পাল্টা শুল্ক বসানো হয়। ৯ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক কার্যকরের দিন অনেকটা ‘ইউটার্ন’ করে তা তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন ট্রাম্প। যদিও সব দেশের ওপর ন্যূনতম ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কার্যকর করা হয়।

সস্তা পোশাকে শীর্ষে চীন, দ্বিতীয় বাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি তথ্যভান্ডারের সংরক্ষিত শীর্ষ পাঁচ রপ্তানিকারক দেশের পরিসংখ্যান তুলনা করে দেখা যায়, গত বছর চীন গড়ে প্রতি পিস পোশাক ২ ডলার ৬২ সেন্টে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করেছে। ভিয়েতনাম প্রতি পিস পোশাক রপ্তানি করেছে ৪ ডলার ৬২ সেন্টে। বাংলাদেশের প্রতি পিসের রপ্তানি মূল্য ছিল ৩ ডলার ৬৩ সেন্ট। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শীর্ষ পাঁচ রপ্তানিকারক দেশের মধ্যে বেশি দরে পোশাক রপ্তানি করেছে ইন্দোনেশিয়া। তারা প্রতি পিস পোশাক রপ্তানি করেছে ৫ ডলার ৪৬ সেন্ট। মোজা ও গ্লাভস ছাড়া এই হিসাব করা হয়েছে।

চার ধরনের পোশাকের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চীন গড়ে প্রতি পিস ট্রাউজার বা প্যান্টজাতীয় পোশাক রপ্তানি করছে ৩ ডলার ৭৮ সেন্টে। বাংলাদেশের রপ্তানি প্রতি পিস ৫ ডলার ১৮ সেন্ট। এ ক্ষেত্রে চীন গত বছর ২২৯ কোটি ডলারের ট্রাউজার রপ্তানি করেছে, বাংলাদেশের রপ্তানি ৩০৭ কোটি ডলারের। অবশ্য ভিয়েতনাম প্রতি পিস ট্রাউজার ৫ ডলার ৮৪ সেন্টে রপ্তানি করেছে। দেশটি গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে ৩৮৯ কোটি ডলারের ট্রাউজার রপ্তানি করেছে।

শার্ট রপ্তানিতেও চীনের চেয়ে বেশি দাম পাচ্ছে বাংলাদেশ। গত বছর বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৮০ কোটি ডলারের শার্ট রপ্তানি করে। প্রতি পিস শার্টের গড় রপ্তানি মূল্য ছিল ৪ ডলার ৮৮ সেন্ট। চীন গড়ে ৪ ডলার ৬২ সেন্টে প্রতি পিস শার্ট রপ্তানি করেছে। অবশ্য ভিয়েতনাম বেশি দামে শার্ট রপ্তানি করেছে, প্রতি পিস ৬ ডলার ৮৯ সেন্ট। আর ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি করা শার্টের গড় মূল্য ছিল ৬ ডলার ৯০ সেন্ট।

টি-শার্ট ও সোয়েটার রপ্তানিতে দামের ক্ষেত্রে চীনের চেয়ে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। সবচেয়ে সস্তা টি-শার্ট রপ্তানি করে বাংলাদেশ। প্রতি পিসের গড় রপ্তানি মূল্য ১ ডলার ৬৬ সেন্ট। চীনের রপ্তানি করা টি–শার্টের গড় মূল্য ১ ডলার ৭৬ সেন্ট। ভিয়েতনাম প্রতি পিস টি–শার্ট ২ ডলার ৭৪ সেন্টে রপ্তানি করে। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া প্রতি পিস সোয়েটারের গড় মূল্য ৩ ডলার ৯৪ সেন্ট। বাংলাদেশের প্রধান দুই প্রতিযোগী চীন ও ভিয়েতনাম সোয়েটারে এগিয়ে।

বৈচিত্র্যে এগিয়ে চীন-ভিয়েতনাম

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গত বছর বাংলাদেশ ৪৬১ ধরনের তৈরি পোশাক (আট সংখ্যার এইচএসকোড) রপ্তানি করেছে। এই সংখ্যা চীনের ৬২৮, ভিয়েতনামের ৫২১ ও ভারতের ৫৫৯। পোশাক ও কাপড়ভেদে ধরন বিভাজন করা হয়। বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকার পেছনে মূল কারণ পোশাকে কম বৈচিত্র্য।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় ম্যান মেইড ফাইবার (এমএমএফ) বা কৃত্রিম তন্তুর কাপড়ে তৈরি পোশাক। এই পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষে রয়েছে চীন। গত বছর দেশটি ১ হাজার ৩৩১ ডলারের কৃত্রিম তন্তুর পোশাক রপ্তানি করেছে। অন্যদিকে ভিয়েতনাম রপ্তানি করেছে ৯৩৫ কোটি ডলারের পোশাক।

বাংলাদেশের অবস্থান ঠিক উল্টো। গত বছর বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে যত পোশাক রপ্তানি করেছে তার ২৯ শতাংশ ছিল কৃত্রিম তন্তুর পোশাক। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের পেছনে থাকা ভারতের হার আরও কম, ২৬ শতাংশ। তার মানে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হওয়ার মোট তৈরি পোশাকের ৭১ শতাংশ তুলার (কটন) তৈরি, ভারতের এই হার ৭৪ শতাংশ। তার মানে বাংলাদেশ-ভারত উভয় দেশই কৃত্রিম তন্তুর পোশাক রপ্তানিতে চীন-ভিয়েতনামের চেয়ে পিছিয়ে।

তৈরি পোশাকের বৈচিত্র্যের কারণে চীন-ভিয়েতনাম কীভাবে এগিয়ে গেছে তার একটি উদাহরণ দেওয়া যাক। চীন গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে ১১৬ কোটি ডলারের মোজা রপ্তানি করেছে। বেশির ভাগই নন কটন। বাংলাদেশ এই পণ্য রপ্তানি করেছে ৫ লাখ ডলারের। ভিয়েতনামের রপ্তানি প্রায় ১২ কোটি ডলার।

কৃত্রিম তন্তুর তৈরি সোয়েটারজাতীয় পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষে চীন ও ভিয়েতনাম। গত বছর চীন ৮৬ ও ভিয়েতনাম ৭৫ কোটি ডলারের সোয়েটার রপ্তানি করেছে, যেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি মাত্র ১৫ কোটি ৬৪ লাখ ডলার। গ্লাভস রপ্তানিতেও এগিয়ে চীন। গত বছর প্রায় ৭২ কোটি ডলারের গ্লাভস রপ্তানি করেছে দেশটি, যেখানে বাংলাদেশ করেছে ২ কোটি ডলারের কম।

তথ্যভান্ডার অনুযায়ী, ৩৪১ ধরনের পোশাকে শীর্ষ স্থানে রয়েছে চীন। ভিয়েতনাম ৮৯ ধরনের পোশাকে শীর্ষে। এই পোশাকের বড় অংশই কৃত্রিম তন্তুর। বাংলাদেশ শীর্ষে রয়েছে ২৫ ধরনের পোশাকে। তার বেশির ভাগই কটন পোশাক।

বিষয়টি নিশ্চিত করে স্প্যারো গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শোভন ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, চীনের রপ্তানিকারকেরা ৫০০ থেকে ৩ হাজার পিসের ক্রয়াদেশের পোশাক তৈরি করে। পাশাপাশি লাখ লাখ পিসের বড় ক্রয়াদেশের কাজও করে। বাংলাদেশের কারখানাগুলোর চীনের মতো বড় ক্রয়াদেশের পোশাক উৎপাদন করার সক্ষমতা থাকলেও ছোট ক্রয়াদেশে মুনাফা করতে পারে না। অনেক চীনা কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে গুদামে পোশাক মজুত করে ক্রেতাদের সরবরাহ করে। সব মিলিয়েই তাই চীন আমাদের থেকে কম দামে পোশাক উৎপাদন করতে পারে।

শক্তির জায়গা দুর্বল হচ্ছে

গত বছর যুক্তরাষ্ট্র ৬৩৯ ধরনের পোশাক আমদানি করেছে। এর মধ্যে শীর্ষ স্থানে রয়েছে কটন ট্রাউজার। এই পণ্য সবচেয়ে বেশি রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। গত বছর ১৪৪ কোটি ডলারের কটন ট্রাউজার রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। শীর্ষে থাকা পণ্যটির রপ্তানি গত বছরের চেয়ে সামান্য কম। তার মানে বাংলাদেশের শক্তির জায়গা দুর্বল হতে শুরু করেছে।

পরিমাণ ও শতাংশের হারের তুলনা করে দেখা গেছে, কটন পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত। দুই দেশেরই তুলার কাপড়ের পোশাকে নির্ভরতা বেশি। অন্যদিকে পরিমাণের হিসাবে তুলার কাপড়ের পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষে রয়েছে ভিয়েতনাম। দেশটি গত বছর কটন পোশাক রপ্তানি করেছে ৫৭৬ কোটি ডলারের। বাংলাদেশের রপ্তানি ছিল ৫৭০ কোটি ডলারের।

বৈশ্বিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রাইসওয়াটারহাউসকুপারসের (পিডব্লিউসি) এক গবেষণায় বলেছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক পোশাক রপ্তানি বেড়ে ১ হাজার ১২১ বিলিয়ন বা ১ লাখ ১২ হাজার ১০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়াবে। সেখানে কৃত্রিম তন্তু দিয়ে তৈরি পণ্যের হিস্যা হবে ৬০ শতাংশ। এখানে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটি বলছে, প্রতিযোগী দেশগুলোর মধ্যে বর্তমানে (২০২২ সালের হিসাব) চীন, ভিয়েতনাম, তুরস্ক ও ইতালি কৃত্রিম তন্তুর পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। এর মধ্যে মোট পোশাক রপ্তানির বিপরীতে কৃত্রিম তন্তুর পোশাকে চীনের হিস্যা ৬২ শতাংশ, ভিয়েতনামের ৫৬ শতাংশ, তুরস্কের ৪৮ শতাংশ ও ইতালির ৪৪ শতাংশ। অন্যদিকে বাংলাদেশের মোট তৈরি পোশাক রপ্তানির ২৭ শতাংশ কৃত্রিম তন্তুর পণ্য।

করণীয় কী

তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বৈচিত্র্য বাড়াতে হলে কৃত্রিম তন্তুতে জোর দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কৃত্রিম তন্তুর পোশাকের রপ্তানি বাড়ানো গেলে রপ্তানি আয় বাড়বে। এ ধরনের পোশাকের দাম তুলনামূলক বেশি। বৈশ্বিক বাজার হিস্যাও দিন দিন বাড়ছে। যদিও আমাদের স্থানীয় উদ্যোক্তারা তুলা থেকে কৃত্রিম তন্তুর পোশাকে যাওয়ার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত নন। ফলে যাঁরা প্রস্তুত, তাঁদের বিনিয়োগে উৎসাহ দিতে হবে।

খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, পণ্যের বৈচিত্র্য আনতে হলে বিনিয়োগেও বৈচিত্র্য আনতে হবে। বর্তমানে সব পণ্য ও বাজারে প্রণোদনা দেয় সরকার। দেশি সুতা ব্যবহারেও প্রণোদনা দেওয়া হয়। এই প্রণোদনাকাঠামো পরিবর্তন করতে হবে। কৃত্রিম তন্তুর পোশাক রপ্তানিতে প্রণোদনা দিতে হবে। তাহলে কৃত্রিম তন্তুর তৈরি পোশাকের রপ্তানি বাড়বে।

Govt to settle TNZ workers’ dues by 7 days; going after owner through Interpol

The interim government has taken several measures to resolve the issue of pending wages and service benefits of workers at the TNZ Group’s garment factory, including clearing the dues by the next seven working days.

The authorities have decided to sell TNZ Group’s washing plant and the owner’s residence at DOHS in Dhaka’s Mohakhali to clear the workers’ dues, said the Chief Adviser’s press wing on Tuesday night, referring to the initiatives taken by the Ministry of Labour and Employment.

As part of the series of measures, the government will try to bring back the TNZ Group owner home, who is currently abroad, by issuing a red alert through Interpol.

Additionally, travel bans have been imposed on directors and others involved in the company’s management.

As all parties have reached a consensus over the settlement, the workers’ leaders will withdraw their planned siege of the ‘Shrom Bhaban’, the seat of the government’s labour wing.

Meanwhile, the Director (Finance) of TNZ Group will remain in government custody until all outstanding payments to the workers are made, it added.

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের জন্য সংকুচিত হচ্ছে ভারতের বাজার?

ভারত গত এপ্রিল মাসের শুরুতে হঠাৎ করেই বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে দেয়। এরপর স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে সুতা আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। এর এক মাসের মাথায় এবার ভারতও বাংলাদেশি পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক সামগ্রীসহ বেশ কিছু পণ্য এখন আর ভারতের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।

রফতানিকারকদের আশঙ্কা, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে। কারণ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, বিশেষ করে— আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামে বাংলাদেশ গত কয়েক বছর ধরে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে পোশাক ও ভোগ্যপণ্য রফতানি করে আসছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের জন্য ভারতের বাজার সংকুচিত হওয়ার শঙ্কা করছেন তারা। 

নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষাপট

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যে দু’দেশের পাল্টাপাল্টি বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার ঘটনা ঘটে। চলতি বছরের এপ্রিল মাসের শুরুতে ভারত তার সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমসের (সিবিআইসি) নির্দেশনার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে তৃতীয় কোনও দেশে রফতানির ক্ষেত্রে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে। এরপর ৯ এপ্রিল বাংলাদেশও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে সুতা আমদানি বন্ধ করে দেয়। এই প্রেক্ষাপটে ভারত শনিবার (১৭ মে) নতুন এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানায়, এখন থেকে শুধু কলকাতা ও নবসেবা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করেই বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। এর বাইরেও বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে ফলমূল, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিকসামগ্রী, সুতা ও আসবাবপত্র আমদানিও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

কেন ভারতীয় ক্রেতারা বাংলাদেশের পোশাকে আগ্রহী?

বিজিএমইএর কর্মকর্তারা বলছেন, গুণগত মান, প্রতিযোগিতামূলক মূল্য ও সময়মতো পণ্য সরবরাহের কারণে ভারতীয় ক্রেতারা বাংলাদেশি পোশাকের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। ভারতীয় বাজারে উচ্চ প্রবৃদ্ধির পেছনে রয়েছে সঠিক বিপণন কৌশল এবং সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে বাংলাদেশের ভৌগোলিক সুবিধা। তবে হঠাৎ করে এসব স্থলবন্দর বন্ধ হওয়ায় রফতানি কার্যক্রমে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সমুদ্রপথে রফতানিতে সময় ও খরচ বাড়ায় প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়বে বলে মনে করছেন রফতানিকারকরা।

ভারতে পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধি ১৮.৮৫ শতাংশ

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) ভারতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানিতে ১৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে ভারতীয় বাজারে মোট রফতানি আয় হয়েছে ৫৬ কোটি ৩৮ লাখ ১০ হাজার ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এ আয় প্রায় ৯ কোটি ডলার বেশি।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ যে পরিসংখ্যান সংকলন করেছে, তাতে দেখা গেছে— অপ্রচলিত বাজার হিসেবে চিহ্নিত ১৫টি দেশের মধ্যে ভারত অন্যতম প্রবৃদ্ধিশীল গন্তব্যে পরিণত হয়েছে।

বিশ্ববাজারে গত অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট পোশাক রফতানির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ২৬৪ কোটি ১ লাখ ২০ হাজার ডলার। এর মধ্যে অপ্রচলিত বাজারে রফতানি হয়েছে ৫৪৭ কোটি ৮৭ লাখ ২০ হাজার ডলারের পণ্য।

ভারতের পাশাপাশি চীনেও পোশাক রফতানিতে সামান্য প্রবৃদ্ধি (২ দশমিক ৮২ শতাংশ) হলেও ভারতীয় বাজারের প্রবৃদ্ধির হার তুলনামূলক অনেক বেশি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশি পোশাকের গুণগত মান, প্রতিযোগিতামূলক মূল্য এবং সময়মতো ডেলিভারির কারণে ভারতীয় ক্রেতারা আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

এবার ভারতের বাজারে ধাক্কা খাবে বাংলাদেশি পোশাক

ভারতের নতুন নির্দেশনায় নতুন করে ভারতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রফতানির পথে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি হলো। শনিবার ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানায়, স্থলপথ ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করা যাবে না। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক সামগ্রীসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পণ্য এখন থেকে দেশটির বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।

শনিবার (১৭ মে) ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমসের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, এখন থেকে বাংলাদেশি পণ্য শুধুমাত্র কলকাতা ও নব সেবা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে আমদানি করা যাবে। ফলে সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলো যেমন- ত্রিপুরা, আসাম, মেঘালয় ও মিজোরামে বাংলাদেশি পণ্যের প্রবেশ কঠিন হয়ে পড়বে। তবে এ নিষেধাজ্ঞা নেপাল ও ভুটানের উদ্দেশে ভারতের ট্রানজিট ব্যবহার করে যে পণ্য পাঠানো হয়, তার ক্ষেত্রে কার্যকর হবে না।

বাংলাদেশের রফতানিকারকদের আশঙ্কা, ভারতের এই সিদ্ধান্ত দেশের পোশাক খাতসহ মোট রফতানি প্রবাহে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। প্রসঙ্গত, উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে গত কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশি তৈরি পোশাক, খাদ্যদ্রব্য ও দৈনন্দিন ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বেড়ে চলেছে।

দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে উত্তেজনা

বাংলাদেশ থেকে পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যে ভারতের কড়াকড়ি আরোপের ঘটনায় দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, ভারতের মূল ভূখণ্ড ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পণ্যের প্রবেশে একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ফলের রস, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য ও তৈরি পোশাক— এসব নিষেধাজ্ঞায় ক্ষতিগ্রস্ত হবেন আমাদের রফতানিকারকরা।’

তিনি বলেন,‘স্থলপথে এ ধরনের হঠাৎ নিষেধাজ্ঞা বাণিজ্যের খরচ ও অনিশ্চয়তা বাড়ায়, যা বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য ক্ষতিকর। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাজার। সেখানে প্রবেশাধিকার সীমিত হওয়ায় সীমান্তবর্তী বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত হবে।’

সেলিম রায়হান আরও বলেন,‘বিশেষ করে তৈরি পোশাক রফতানিতে এখন দূরবর্তী সমুদ্রবন্দর নির্ভর করতে হবে, যা ব্যয় ও সময় বাড়াবে। এতে বহু বছরের গড়ে ওঠা সরবরাহ শৃঙ্খলা চাপে পড়বে।’

তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক সহযোগিতার চেতনায় এসব অশুল্ক বাধা পুনর্বিবেচনা করা হবে। গঠনমূলক সংলাপ ও সমন্বয়ের মাধ্যমে বাণিজ্য সহজীকরণ সম্ভব।’

বিপাকে রফতানিকারকরা

ভারত সরকার বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের শীর্ষ রফতানিকারক ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, হঠাৎ করে নেওয়া এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের রফতানি বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে ভারতমুখী রফতানি ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ হয়ে পড়বে।

প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য রফতানিতে ভারতের অন্যতম প্রধান গন্তব্য প্রতিষ্ঠান প্রাণ গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটির বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভারতের এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের রফতানিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। প্রাণ গ্রুপ মূলত স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পণ্য পাঠায়। নিষেধাজ্ঞার কারণে রফতানিতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কারণ, সমুদ্র কিংবা আকাশপথে রফতানি অনেক বেশি ব্যয়বহুল।’

তৈরি পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘হঠকারী এ সিদ্ধান্তের ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কে কিছুটা হলেও অবনতি ঘটবে। বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এমন পাল্টাপাল্টি বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা উভয় পক্ষের জন্যই ক্ষতিকর হবে।’

তিনি জানান, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে গড়ে ৫০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক ভারতে রফতানি করা হয়। কিন্তু নতুন নিষেধাজ্ঞার ফলে এই রপ্তাফতানিতে সময় ও ব্যয় দুটোই বাড়বে। এতে করে ভারতীয় বাজারে বাংলাদেশের পোশাকের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান দুর্বল হতে পারে।

রুবেল আরও বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশের অন্যতম বড় পোশাক ক্রেতা এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটিতে আমাদের রফতানি প্রবৃদ্ধি ভালোই ছিল। এ নিষেধাজ্ঞা আমাদের জন্য নতুন করে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভুটান বা নেপালের মতো দেশগুলোর ক্ষেত্রে ভারতের এ নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও, সামগ্রিকভাবে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক বাণিজ্যে বিরূপ প্রভাব পড়বে।’

কূটনৈতিক সমাধানের আহ্বান

এদিকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরদিন রবিবার (১৮ মে) বেনাপোল স্থলবন্দরে আটকে গেছে তৈরি পোশাকবোঝাই ৩৬টি ট্রাক। ঢাকার মৌসুমী গার্মেন্টস ও স্কয়ার ফ্যাশনের চালানসহ এসব পণ্য রফতানির অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। অপরদিকে  বুড়িমারী সীমান্তে আটকে গেলো প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য। এসব ট্রাকবোঝাই পণ্য রবিবার সকালে বুড়িমারী সীমান্ত পার হয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ি যাওয়ার কথা ছিল।

জানা গেছে, আদেশ জারির পর থেকেই রবিবার থেকে এসব পণ্যের রফতানি কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এতে বাংলাদেশের রফতানিকারকেরা চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। রফতানিকারক ও বিশ্লেষকদের মতে, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ককে টেকসই রাখতে হলে অবিলম্বে কূটনৈতিকভাবে সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে হবে। বিশ্লেষকদের মতে, বিকল্প রুট যেমন- সমুদ্র বা আকাশপথ ব্যবহার করতে হলে রফতানিকারকদের বাড়তি খরচ ও জটিলতা মোকাবিলা করতে হবে। ফলে নিরবচ্ছিন্ন বাণিজ্য সংযোগ পুনঃস্থাপনে কূটনৈতিক উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। বাংলাদেশের বাণিজ্য সচিব মো. মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, এ বিষয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা চলছে।

অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, বাণিজ্যিক বিষয়ে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রতিফলন যেন বাজার ও শিল্পকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে, তা নিশ্চিত করাই এখন সময়ের দাবি। ভারতীয় বাজারে প্রবেশাধিকার হারানো মানে শুধু পোশাক খাত নয়, সামগ্রিক রফতানি ব্যবস্থার জন্যও একটি বড় ধাক্কা।

বাণিজ্যে বড় ঘাটতি

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ব্যাপক ঘাটতি অব্যাহত রয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে (প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী) বাংলাদেশ ভারত থেকে ৯০০০.১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করলেও রফতানি হয়েছে মাত্র ১৫৬৯.২৪ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। ফলে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৪৩০.৯১ মিলিয়ন ডলার।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে এই ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১১,৬৯৮.৫ মিলিয়ন ডলার, যা সাম্প্রতিক সময়ে সর্বোচ্চ। এরপর কিছুটা ঘাটতি কমলেও সামগ্রিকভাবে ভারসাম্যহীনতা রয়ে গেছে।

বাংলাদেশের পোশাক শিল্প— বিশেষ করে নিট ও ওভেন পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে ভারতের বাজার গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এ খাতেও সম্প্রতি প্রবৃদ্ধি নিম্নমুখী। ২০২১-২২ অর্থবছরে যেখানে নিট ও ওভেন মিলিয়ে মোট ৭১৫.৪১ মিলিয়ন ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছিল, সেখানে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৫৪৮.৮৩ মিলিয়ন ডলারে, যা ১৯.৭ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি নির্দেশ করে। এর আগে, ২০২২-২৩ অর্থবছরেও পোশাক রফতানি কমেছিল ৪.৪৬ শতাংশ।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ভারতে সবচেয়ে বেশি রফতানি হয়েছে তৈরি পোশাক, যার পরিমাণ ৫৪ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার। তবে এই পোশাকের একটি বড় অংশই গেছে স্থলপথে। ভারতের হঠাৎ এই নিষেধাজ্ঞা পোশাক খাতের পাশাপাশি কৃষিপণ্য ও প্লাস্টিক শিল্পেও বড় ধরনের ধাক্কা দিতে পারে।

২০২৩–২৪ অর্থবছরে ভারতে বাংলাদেশ রফতানি করেছে ১৫ কোটি ৬৮ লাখ ডলারের কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ৪ কোটি ৪০ লাখ ডলারের প্লাস্টিক পণ্য, ৩ কোটি ১৩ লাখ ডলারের তুলা ও সুতার উপজাত এবং ৬৫ লাখ ডলারের আসবাব। এসব পণ্যের বড় অংশই যায় স্থলবন্দর হয়ে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারতের সদ্য ঘোষিত আমদানি নিষেধাজ্ঞা ও ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের রফতানি খাতে আরও চাপ বাড়বে। বিশেষ করে পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে বিকল্প রুট ও পরিবহন ব্যবস্থার প্রয়োজন দেখা দেবে। এরই মধ্যে রফতানিকারকেরা বিকল্প বন্দরের খোঁজে রয়েছেন।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতার এই ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

RMG workers block Airport Road in Ctg over unpaid wages, part of Eid-ul-Fitr bonus

Over 2,000 workers from Modiste CEPZ Ltd, a concern of JMS Group in the Chattogram Export Processing Zone (CEPZ), blocked the Airport Road in front of the CEPZ gate this afternoon (19 May), demanding unpaid wages for April and a portion of the Eid-ul-Fitr bonus.

The demonstrating workers declared they would not leave the road until their dues were paid.

Meanwhile, the blockade, which started at around 2pm, suspended traffic movement on the busy road and caused a long tailback.

According to police, the workers began their demonstration inside the factory premises at around 8am, staging a sit-in to voice their grievances. 

However, tensions escalated as the day progressed. Around 2pm, the workers moved to the CEPZ Intersection and blocked the main road, halting vehicular movement in the area.

This protest follows a work abstention carried out by the workers from 11am to 5:30pm yesterday (18 May), during which they ceased production activities inside the factory.

Discussions were held among the Bangladesh Export Processing Zone Authority (Bepza) authorities, the Industrial Police, and worker representatives.

During those talks, factory management reportedly assured over the phone that unpaid salaries would be cleared today.

However, as of the filing of this report, no payment has been made, and the employer has not provided any update.

“The employer failed to fulfil their promise to pay unpaid wages and a portion of the Eid bonus several times. They promised to pay the dues today. As they failed again, the workers took to the streets and blocked the road,” said Mahmudul Hasan, assistant commissioner of Chattogram Metropolitan Police (CMP) Port Zone.

“The workers have declared that they will not leave the road until their dues are paid. We are trying to convince them to clear the road,” he added.

Attempts to contact Mahmud Ali, managing director of Modiste CEPZ Ltd, were unsuccessful as he did not respond to calls from The Business Standard.

Swisscontact to ‘launch ‘InSPIRE’ challenge fund to boost green energy transition in RMG sector

Swisscontact Bangladesh, supported by the Embassy of Sweden, is set to launch the first window of the InSPIRE Challenge Fund at the end of this month, aiming to accelerate the adoption of renewable energy and energy efficiency in Bangladesh’s Ready-Made Garment (RMG) sector.

The announcement was made during a high-level industry consultation workshop held at a reputed hotel in Dhaka today, attended by representatives from the Swedish Embassy, BGMEA, BKMEA, global brands such as H&M, Inditex, and Marks & Spencer, banks, financial institutions, and renewable energy businesses, said a press release.

The initiative seeks to de-risk private investment in green energy by offering grants that cover up to 40% of project costs, while factories are expected to co-finance the remaining 60%. The amount of the Challenge Fund grant varies by project, ranging from one to five lakh Swedish Krona (SEK).

The workshop began with a welcome address by Helal Hossain, country director of Swisscontact Bangladesh. The opening remarks were delivered by  Ikramul H. Sohel, senior Programme officer, Inclusive Economic Development at the Embassy of Sweden.

Maria Stridsman, deputy head of Mission at the Swedish Embassy, stressed the importance of collective action in her opening remarks.

“Bangladesh’s RMG sector is the backbone of its economy, and its green transition will have far-reaching environmental and social impacts. Through InSPIRE – the Initiative to Stimulate Private Investment for Resource Efficiency – we aim to incentivize scalable solutions to reduce carbon emissions,” she said.

The InSPIRE fund is not a loan, but a performance-based grant, designed to bridge financing gaps for mid- and low-tier factories and energy service providers. “We want factories to see that sustainability is not just a cost but a competitive advantage,” said Syeda Ishrat Fatema, deputy country director of Swisscontact. Bidoura Tahmin Khan, Team Leader of InSPIRE, explained that the grants will be categorized into small (6–12 months) and medium (up to 24 months) funding windows to support both pilot projects and high-impact scalable solutions.

The first call for concept notes will open by the end of May, with a four-week submission period. Projects must focus on areas such as solar energy, biomass-based technologies, energy-efficient machinery, or water conservation. They must also align with Bangladesh’s national goal of sourcing 40% of its electricity from renewables by 2041. Azmal Huda, InSPIRE’s MRM Manager, noted that technically sound projects with gender-inclusive policies and no double funding will be prioritized.

Global brands expressed strong support for the initiative. A representative from H&M said, “We collaborate closely with our suppliers on energy audits and co-financing to drive efficiency and reduce emissions.” Inditex shared its roadmap to cut emissions across its supply chain by 2027, urging factories to adopt cleaner technologies. ESCOs (Energy Service Companies) echoed the need for stronger partnerships with brands and banks to ensure the long-term success of green transitions for RMG factories.

Over 200 workers fall ill after drinking water at Gazipur garment factory

More than 200 workers of a garment factory in Gazipur’s Kadda area fell ill today (17 May) after reportedly drinking water supplied at the workplace.

Following the incident, the factory was declared closed for the day.

The affected factory, International Classic Composite Limited (ICC), located under Bason Police Station of Gazipur Metropolitan City, employs around 3,400 workers.

According to police and workers, employees began their shifts as usual in the morning. Shortly after drinking water at the factory, some began experiencing stomach pain and diarrhoea. The number of sick workers quickly rose to over 200.

The factory authorities, along with the workers, arranged treatment for the affected individuals at various local private hospitals.

Superintendent of Police AKM Zahirul Islam of Gazipur Industrial Police-2 confirmed the incident.

“After joining work in the morning, several workers began feeling unwell after consuming the supplied water. As the number of patients increased, the authorities declared a holiday for the day,” he said.

He added that they are coordinating with the factory management to ensure proper medical care for the workers.

“If anyone’s condition worsens, arrangements will be made for advanced treatment. The situation is currently under control,” he added.

সুতা আমদানির মারপ্যাঁচে তৈরি পোশাকশিল্পের ক্ষতিটা কোথায়

দেশের যেকোনো ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতির জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, যা দেশি শিল্পের বিকাশে সাহায্য করবে। তাতে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৈদেশিক বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশ এগিয়ে যাবে। চার দশকের বেশি সময় উদ্যোক্তাদের একাগ্রতা ও পরিশ্রম, শ্রমিকদের অবদান এবং সরকারের নীতি সহায়তার কারণে তৈরি পোশাকশিল্প একটা পর্যায়ে পৌঁছেছে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে সামনের দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে শীর্ষ রপ্তানি আয়ের এই শিল্পকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেই। বরং মাঝেমধ্যেই বিচ্ছিন্ন কিছু কর্মকাণ্ড কিংবা ভুল নীতির কারণে নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে শিল্পটি।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক খাতে অনেক আলোচিত বিষয়ের মধ্যে একটি হচ্ছে বিভিন্ন অভিযোগে গত ১৫ এপ্রিল ভারত থেকে স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সমুদ্রবন্দর দিয়ে আমদানির সুযোগটি বিদ্যমান রয়েছে। যদিও তাতে সময় বেশি লাগে। তার কয়েক দিন আগে ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে ভারতীয় বন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে বাংলাদেশের পণ্য যাওয়ার ব্যবস্থা প্রত্যাহার করেছে ভারত। ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমস (সিবিআইসি) ৮ এপ্রিল এই সুবিধা বাতিল করে।

বাংলাদেশে তুলা উৎপাদন হয় না বললেই চলে। ফলে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। বিভিন্ন দেশ থেকে তুলা আমদানি করে সুতা উৎপাদনে অনেক স্পিনিং মিল বা সুতার কল গড়ে উঠেছে। ভারত থেকেও তুলা আমদানি হয়। মাঝে মোট তুলা আমদানি একটি বড় অংশ ভারত থেকে এলেও এখন কিছুটা কমেছে। তুলার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী এই দেশ থেকে সুতাও আসে। বাংলাদেশে স্পিনিং মিল থাকার পরও ভারত থেকে সুতা আসার বড় কারণ দাম। ভারতীয় সুতার দাম প্রতি কেজিতে ২০ থেকে ৩০ সেন্ট কম পড়ে। বাংলাদেশের সুতার দাম বেশি হলেও নগদ সহায়তার কারণে সেটি পুষিয়ে নিতে পারতেন তৈরি পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা। তবে বিগত সরকার দুই দফায় নগদ সহায়তা কমানোর পর পরিস্থিতি বদলে যায়। প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখতে গত জুলাইয়ের পর কিছুটা কম দামের কারণে ভারতীয় সুতা আমদানি বাড়তে থাকে।

ভারতীয় সুতা আমদানি প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু অনিয়মের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছেন বাংলাদেশের স্পিনিং মিলের মালিকেরা। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, ভারত থেকে সুতা আমদানিতে মিথ্যা ঘোষণা ও কম মূল্যে সুতা আসছে। উদাহরণ দিয়ে বলা যেতে পারে, স্থলসীমান্তে বাংলাদেশ কাস্টমসে যে পরিমাণ সুতা আমদানির কথা বলা হয়, এর চেয়ে বেশি সুতা দেশে আসে। লোকবলের অভাবে সশরীর পরিদর্শন করার সক্ষমতা কম কাস্টমস কর্তৃপক্ষের। এই সুযোগে ৩০ কাউন্টের সুতার চালানের ভেতরে ৮০ কাউন্টের সুতা আনার অভিযোগও আছে।

অসুখ হলে অবশ্যই আমাদের চিকিৎসা করতে হবে। সেটি না করে ভিন্ন কিছু করাটা যৌক্তিক নয়। তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠনের নেতারা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে অনুরোধ করেছেন, স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি বন্ধ না করে অনিয়ম বন্ধের জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া হোক। সুতার কাউন্ট পরিমাপ করার জন্য যন্ত্রপাতি কেনার প্রয়োজন হলে সেটিও দিতে রাজি আছেন তাঁরা। আগ বাড়িয়ে এমন প্রস্তাবের কারণ হচ্ছে, তৈরি পোশাক রপ্তানিতে আমাদের কারখানাগুলোর প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখা।

আমাদের বুঝতে হবে, তৈরি পোশাকের ব্যবসাটি বৈশ্বিক। এখানে প্রতিনিয়ত বিদেশি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হয়। অনেক সময় এক বা দুই সেন্টের জন্য পোশাকের ক্রয়াদেশ হাতছাড়াও হয়ে যায়। এখন আপনি প্রশ্ন করতে পারেন, তাহলে কি আমরা দেশি মিলের সুতা ব্যবহার করব না? দেশি শিল্পের বিকাশে চেষ্টা করব না? আমার উত্তর হচ্ছে, অবশ্যই করব। তবে সেই সুতা প্রতিযোগিতামূলক দামে হতে হবে। না হলে আমরা এই সুতা দিয়ে বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগিতা করতে পারব না। মজার বিষয় হচ্ছে, স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধের পর দেশি মিলমালিকেরা সুতার দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এখানে কোনো তদারকি সংস্থা না থাকায় পোশাকশিল্পের মালিকেরা ভুক্তভোগী হচ্ছেন। তাঁদের বাধ্য হয়ে বেশি দামে সুতা কিনতে হচ্ছে।

স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি বন্ধের পর সুতার মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে আরেকটি বিষয় জোরালোভাবেও সামনে আসছে যে দেশে সুতার চাহিদা ও জোগানের বাস্তব চিত্র কী? সাধারণভাবে বলা যায়, চাহিদা ও জোগানের মধ্যে অসামঞ্জস্য হলেই যেকোনো পণ্যের দাম বাড়ে বা কমে। ফলে সুতার আমদানি নিয়ে কোনো বড় সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চাহিদা-জোগানের বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্যভাবে পরিষ্কার হওয়ার প্রয়োজন ছিল।

বস্ত্রকলের মালিকদের প্রায়ই বলতে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে গ্যাস–সংকটে ভুগছেন। তাঁরা অতিরিক্ত দাম দিয়েও চাহিদামতো গ্যাস পাচ্ছেন না। শুল্ক-কর, ব্যাংকঋণের সুদহার বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে ব্যবসার খরচ বাড়ছে। এতে তাঁদের উৎপাদন ব্যয়ও ব্যাপকভাবে বাড়ছে। কথাগুলো শতভাগ সত্য। ফলে দেশি বস্ত্রকলগুলোর প্রতিযোগিতা সক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সরকারকে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। যেহেতু বাড়তি টাকা দিয়েও তাঁরা গ্যাস পাচ্ছেন না, তাঁদের কীভাবে প্রণোদনা দেওয়া যায়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ, দেশের ভেতরে শক্তিশালী সংযোগ শিল্প না থাকলে তৈরি পোশাকের রপ্তানিও একসময় না একসময় ভয়াবহ বিপদে পড়বে। ফলে গ্যাস–সংকটের মতো মূল সমস্যার সমাধান না করে হুট করে সুতার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল আমদানি প্রক্রিয়া জটিল করলে শেষ বিচারে দেশেরই বড় ধরনের ক্ষতি হবে।

করোনার পর গত চার থেকে পাঁচ বছরে দেশে-বিদেশে একের পর এক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে তৈরি পোশাকশিল্প। তার মধ্যে রয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা, ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক ইত্যাদি। এত কিছুর পর বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বাড়ছে। ভবিষ্যতেও বাড়বে আশা করা যায়। তার কারণ বাংলাদেশ এই জায়গায় বড় ধরনের সক্ষমতা ও দক্ষতা তৈরি করে ফেলেছে। তবে বিভিন্ন কারণে কাঁচামালের সংযোগ শিল্পে দুর্বলতা রয়েই গেছে।

পরিশেষে বলতে পারি, বর্তমান মুক্তবাজার অর্থনীতি কোনো কিছুকে আটকে রেখে উন্নতি করার সুযোগ নেই। অন্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেই আমাদের বিভিন্ন খাতকে শক্তিশালী হতে হবে। কোনো কিছু কৃত্রিমভাবে আটকে রাখলে কোনো না কোনোভাবে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বেই। দেশের ভেতরে প্রতিযোগিতামূলক দামে মানসম্মত পণ্য পেলে কখনোই অন্য দেশে যাবেন না উদ্যোক্তারা। ফলে সাময়িকভাবে একটি পক্ষকে সুবিধা না দিয়ে সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি কীভাবে এগিয়ে যাবে, সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে সরকারকে। কারণ, আমরা সবাই বাংলাদেশের বিজয় দেখতে চাই।

ই-মেইল: Mohiuddinrubel@gmail.com

BGMEA voices concerns over legal cases against RMG owners

The Bangladesh Garment Manufacturers and Exporters Association (BGMEA) has voiced concerns about the impact of recent legal cases on the garment industry.

Speaking at a press conference in the capital yesterday (15 May), Faruque Hassan, a former BGMEA president, said the filing of numerous cases following the government changeover on 5 August, which implicated even businessmen with relatively clean reputations, has negatively affected both business operations and the confidence of international buyers.

“We have already discussed the matter with the relevant authorities to ensure that businesses not involved in any crime do not face harassment,” he said during the press conference where leaders of his panel, Sammilita Parishad, outlined their stance ahead of the upcoming BGMEA elections.

Quazi Moniruzzaman, another former BGMEA president and the current president of Sammilita Parishad, said that there was an anarchic situation after 5 August, during which the names of several businessmen appeared in various cases. “However, these cases will be resolved through due process. And currently, they are not facing any hurdles to operate their businesses.”

Their remarks stem from the period following the ousting of former prime minister Sheikh Hasina, when hundreds of cases were filed against individuals alleged to have attacked protesters. They alleged that numerous individuals with clean reputations, including industry owners, were named as defendants, and that many of these cases were motivated by personal, business, or financial interests.

Moniruzzaman also said, “In the past, business leaders have engaged in factionalism and shameless flattery”, adding, “If our panel, Sammilita Parishad, comes to power through the elections, we will take all necessary steps to put an end to such practices and prevent money laundering abroad.”

At the press conference, it was also announced that Sammilita Parishad’s major agenda includes digital transformation of the BGMEA, one-stop services for members, training and financial support for new entrepreneurs, a sustainable development plan for SME factories, increased use of renewable energy (particularly solar), and strengthening the Made in Bangladesh branding.

Chaity Group Managing Director Abul Kalam, Sparrow Group Managing Director Mustazirul Shovon Islam and other candidates from the Sammilita Parishad panel were also present.

শিল্প খাতে বাড়ছে সংকট, ঘুরে দাঁড়ানোর কৌশল কী

শিল্প খাতে বরাদ্দকৃত গ্যাস বিদ্যুৎ ও সার উৎপাদনে সরিয়ে নেওয়ায় দেশের কল-কারখানাগুলো চরম গ্যাস সংকটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফলে টেক্সটাইলসহ বিভিন্ন খাতে উৎপাদন ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। অনেক কারখানা বন্ধ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। রফতানি আদেশ বাতিল এবং শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঝুঁকিও আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) জানিয়েছে, গ্যাস সংকটের কারণে প্রায় ৪০০ গ্যাসনির্ভর কারখানা পূর্ণ উৎপাদনে যেতে পারছে না। বিশেষ করে গাজীপুর, কোনাবাড়ি, শফিপুর, নারায়ণগঞ্জ, ধামরাই ও মানিকগঞ্জ শিল্পাঞ্চলে গ্যাসের চাপ প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। এর ফলে উৎপাদন ব্যাহত হয়ে টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস শিল্পে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, গ্যাস ও ব্যাংকিং সংকটে উৎপাদনমুখী শিল্প চরম বিপর্যয়ে পড়েছে। গ্যাসের চাপ এতটাই কম যে শিল্পাঞ্চলগুলোতে মেশিনারিজ চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে কারখানাগুলো বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন উদ্যোক্তারা এবং প্রতিদিনই লোকসান গুনতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, বিদ্যুতের সমস্যা থাকলেও গ্যাস সংকটই এখন সবচেয়ে বড় বাধা। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও আশুলিয়ায় গ্যাসের চাপ কোথাও কোথাও প্রায় শূন্যের কোঠায়। এ অবস্থায় উৎপাদন চালানো সম্ভব নয়।

ব্যাংকিং খাত নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ব্যাংকগুলো ব্যাক টু ব্যাক এলসিতে বিলম্ব করছে, ওভার ডিও হলেই এলসি বন্ধ করে দিচ্ছে। ফলে পণ্য সময়মতো পাঠানো যাচ্ছে না, অনেক সময় এয়ার শিপমেন্ট বা ডিসকাউন্ট দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। এতে প্রতিনিয়ত ক্ষতির মুখে পড়ছে রফতানিকারকরা।

এ প্রসঙ্গে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির এক কর্মকর্তা জানান, গাজীপুর অঞ্চলে প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা থাকলেও সরবরাহ নেমে এসেছে ৪৫০ মিলিয়ন ঘনফুটে। ফলে শিল্পকারখানাগুলো ব্যয়বহুল বিকল্প জ্বালানি ডিজেল, এলপিজি ও সিএনজি ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে, যার ফলে উৎপাদন ব্যয় অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাচ্ছে।

বিটিএমএ’র তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে ১৮৫৪টি টেক্সটাইল কারখানা রয়েছে, যেখানে ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৯০০টি কারখানা গ্যাসনির্ভর, বিশেষ করে স্পিনিং মিলগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মূলধনের পরিমাণ ১০০ কোটি থেকে এক হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করা এসব প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় রফতানি আদেশ বাতিল এবং বিদেশি ক্রেতা হারানোর ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে।

গার্মেন্ট কারখানায় কর্মরত শ্রমিকরা, ছবি: সংগৃহীতনাম প্রকাশ না করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান জানান, ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে প্রতিদিন গ্যাস সরবরাহ ১০০ থেকে ১২০ মিলিয়ন ঘনফুট কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে বহু কারখানা কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।

শিল্প উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, গ্যাসের দাম দুই দফায় বৃদ্ধি করা হলেও সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। উদ্যোক্তারা বলছেন, এতে অনেক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হচ্ছে। বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, কারখানাগুলোর অনেক সক্ষমতা অব্যবহৃত থাকছে, অথচ জ্বালানি ও জনবল খরচ ঠিকই বহন করতে হয়েছে, যা মালিকদের মূলধন থেকেই গেছে। ফলে অনেকেই খেলাপিতে পরিণত হচ্ছেন। গাজীপুরের স্প্যারো অ্যাপারেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শোভন ইসলাম জানান, ‘গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির পরও কোনও কোনও দিন মাত্র দুই ঘণ্টার মতো গ্যাস পাই। এভাবে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বিদেশি ক্রেতারা পণ্য সরবরাহ সংকটে অন্য দেশে চলে যাচ্ছেন।’

পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, দেশের মোট গ্যাসের চাহিদা প্রায় ৪ হাজার ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট হলেও সরবরাহ করা হচ্ছে মাত্র ২ হাজার ৬৯৮ মিলিয়ন ঘনফুট। এর মধ্যে দেশীয় উৎপাদন ১৮৪২ মিলিয়ন এবং আমদানিকৃত এলএনজি ৮৫৬ মিলিয়ন ঘনফুট। চাহিদা ও সরবরাহের এ বিশাল ব্যবধানের কারণে শুধু শিল্প নয়, সিএনজি স্টেশন ও আবাসিক খাতও সংকটে পড়েছে।

তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে শিল্প খাতের গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিতাস গ্যাসের অপারেশন বিভাগের একজন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘আগামী মাস থেকে এলএনজি সরবরাহ কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ততদিনে অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।’

চট্টগ্রামের চিত্রও ভিন্ন নয়। কর্ণফুলী গ্যাস সূত্র জানায়, চট্টগ্রামে দৈনিক ৩০-৩৩ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি চলছে। সার উৎপাদন কারখানা সিইউএফএল ১৮ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। সিরামিক শিল্পে উৎপাদন কমে গেছে ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্যাস সরবরাহ সংকট অব্যাহত থাকলে দেশের শিল্প খাতে ভয়াবহ মন্দা দেখা দেবে। বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান এবং রফতানি প্রবৃদ্ধি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শিল্প মালিকরা পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যানকে একাধিক চিঠি দিয়ে দ্রুত গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করার অনুরোধ জানিয়েছেন। তাদের মতে, শিল্পকে বাঁচাতে এবং দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে শিল্প খাতে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।

নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, ভুলতা, মাওনা ও টঙ্গীসহ শিল্পাঞ্চলগুলোতে গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় অনেক কারখানায় উৎপাদন সক্ষমতা ৩০-৪০ শতাংশে নেমে এসেছে। ফলে ৭০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ হুমকির মুখে। স্পিনিং, ডাইং, প্রিন্টিংসহ নানা কাজে প্রতিদিন প্রায় ২০০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস প্রয়োজন হলেও সরবরাহ তা থেকে অনেক কম।

বিকেএমইএ ও বিটিএমএ বলছে, এই সংকটে প্রতিটি স্পিনিং মিল দিনে গড়ে ২৫ লাখ টাকা লোকসান দিচ্ছে। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি, যদিও সাময়িকভাবে স্থগিত, পশ্চিমা ক্রেতাদের মধ্যে দ্বিধা তৈরি করেছে। ফলে নতুন রফতানি আদেশ আসতে দেরি হচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।

এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন। মাত্র দুই বছরে ডলারের মূল্য ৮৫ টাকা থেকে বেড়ে ১২২ টাকায় পৌঁছেছে। এতে তুলা ও যন্ত্রপাতি আমদানিতে খরচ বেড়েছে, কার্যকরী মূলধনের সংকট দেখা দিয়েছে। বিটিএমএ’র সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, ‘করোনা, যুদ্ধ, মুদ্রা সংকটের পর ঘুরে দাঁড়ানোর সময়েই নতুন করে গ্যাস ও শুল্ক সংকটে পড়েছে শিল্প খাত।’ তার মতে, এখনই কার্যকর সমাধান না হলে বহু কারখানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

এদিকে শিল্প খাতের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে রফতানি আয়েও। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল মাসে রফতানি আয় নেমে এসেছে ৩ দশমিক ০১ বিলিয়ন ডলারে, যা চলতি অর্থবছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। মার্চের তুলনায় এটি প্রায় ১ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলার কম। বিশেষ করে ওভেন পোশাক রফতানিতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি এবং সামগ্রিক পোশাক খাতে ধীরগতির প্রভাব স্পষ্ট।

RMG BANGLADESH NEWS