Home Bangla Recent পোশাক খাত নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে

পোশাক খাত নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে

বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তীতে পোশাক খাতে ৫০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের পর পরই এ খাত নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘দেশে আমরা কিছু না জানলেও এই দেশের কিছু শ্রমিক নেতা আমাদের পোশাক খাতের অনিয়ম নিয়ে অভিযোগ দেওয়া শুরু করে তাদের বিদেশি প্রভুদের কাছে।

এ নিয়ে আমাদের বিদেশিদের কাছে অনেকবার বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। এখন মনে হচ্ছে, নির্ধারিত রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা দেওয়াটাই ভুল ছিল। ’

তিনি বলেন, কিছু শ্রমিক নেতা আমেরিকার রাষ্ট্রদূতের কাছে শ্রমিকদের সমস্যার কথা বলে চিঠি দিয়েছে। অথচ আমরা তা জানি না। সেসব নেতারা কোনো শ্রমিকও না। তারা কিছু সংগঠনের কাছ থেকে ভালো বেতন-বোনাসও পেয়ে থাকে। গতকাল বুধবার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে বিজিএমইএ আয়োজিত ‘পোশাকশিল্পের বর্তমান ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বিজিএমইএ সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে অন্যদের মধ্যে ছিলেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ও খাতসংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিজিএমইএ সহসভাপতি মোহাম্মদ নাছির।

প্রবন্ধে তিনি পোশাকশিল্পের জন্য কর রেয়াত সুবিধাসহ প্রণোদনা দাবি করেন। এ ছাড়া ব্যাংকঋণের জন্য আরো সহজ শর্ত চান। বাণিজ্যমন্ত্রী আরো বলেন, দেশের পোশাকশিল্পে কর্মসংস্থানসহ অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখছে। কিন্তু এ খাত বর্তমানে কঠিন চ্যালেঞ্জেরে মধ্যে যাচ্ছে। তাই পোশাক খাতের অগ্রগতি ধরে রাখতে সবাইকে সমন্বিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পোশাকশিল্পে অনেক সংস্কার করেছি। বিশ্বের প্রথম ১০টি গ্রিন কারখানার মধ্যে ৭টি আমাদের। একটি কারখানাকে নতুন রূপে সাজাতে সর্বনিম্ন ৫ কোটি টাকা থেকে ২০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। এর পরেও আমেরিকাসহ বিভিন্ন বন্ধুরা আমাদের নেতিবাচকভাবে দেখে। আমরা মাত্র ১ বছরের মধ্যে শ্রমিক আইন করেছি। অথচ আমেরিকার এটা করতে প্রায় ২৫ বছর লেগেছে। তাদের মাত্র ৩০ শতাংশ শিল্পে ট্রেড ইউনিয়ন রয়েছে। অথচ তারা আমাদের ট্রেড ইউনিয়ন করার জন্য চাপ দিচ্ছে। অ্যাকর্ডের মেয়াদ ২০১৮ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তারা আরো ৫ বছর থাকতে চাচ্ছে। ’

পোশাকশিল্পে প্রণোদনা দেওয়ার প্রয়োজন আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, হয়তো আমাদের সমস্যার কারণে এটা তাদের দিতে পারছি না। ব্যবসায়ীদের দাবিগুলো যুক্তিসংগত। আমরা এগুলো সমাধান করার চেষ্টা করছি।

প্রবন্ধে বলা হয়, বিশ্ববাজার প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা হারাচ্ছে দেশের তৈরি পোশাক খাত। একদিকে বাড়ছে উৎপাদন খরচ, অন্যদিকে কমছে পোশাকের দর। একই সঙ্গে আবার বিশ্ববাজারে কমছে পোশাকের চাহিদা। গত দুই বছরে উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে ১৮ শতাংশের মতো। এ সময় প্রধান দুই বাজার ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রে দর কমেছে গড়ে প্রায় ৭ শতাংশ। আর বিশ্ববাজারে পোশাকের চাহিদা কমেছে ৮ শতাংশ। এসব কারণে গত অর্থবছরে (২০১৬-১৭) পোশাকের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি নেমে এসেছে ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন স্থানে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here