Home বাংলা নিউজ এই দশক চ্যালেঞ্জের, আবার সম্ভাবনারও

এই দশক চ্যালেঞ্জের, আবার সম্ভাবনারও

তৈরি পোশাকের বৈশ্বিক ব্যবসার জন্য আগামী ১০ বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে ব্যবসাটির গতিধারায় খোলনলচে পাল্টে যাবে। অটোমেশন বা স্বয়ংক্রিয় সরবরাহব্যবস্থা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন রোবট, টেকসই ব্যবস্থাপনা ও পুনরুৎপাদন পদ্ধতি চালু করতে হবে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত হতে পারলেই নতুন ব্যবসা আসবে।

বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক ও অলাভজনক সংস্থা এইচঅ্যান্ডএম ফাউন্ডেশনের যৌথভাবে আয়োজিত ‘স্টিচ ফর আরএমজি’ শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। গতকাল মঙ্গলবার অনলাইনে তিন দিনের এই সম্মেলন শুরু হয়েছে।

সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে এইচঅ্যান্ডএম ফাউন্ডেশনের বৈশ্বিক ব্যবস্থাপক ডায়না মিনি বলেন, রপ্তানিমুখী পোশাক খাতে দ্রুত পরিবর্তন আসছে। এর ওপর চতুর্থ শিল্পবিপ্লবও প্রভাব ফেলছে। এতে সম্ভাবনার পাশাপাশি ঝুঁকিও রয়েছে। এই সময়ে অটোমেশন মানে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা চালু হওয়ার দরুন নারী শ্রমিকদের চাকরি হারানোর শঙ্কা আছে। তাই নারীদের কর্মসংস্থান ধরে রাখতে হলে তাঁদের দক্ষতা বাড়াতে হবে।

এই অধিবেশনে আরও বক্তব্য দেন ব্র্যাকের জ্যেষ্ঠ পরিচালক কে এ এম মোরশেদ।

পরের অধিবেশনে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা তুলনামূলক আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করছেন। তবে সেসব যন্ত্রপাতি প্রচলিত বাজার ও বেসিক পোশাক তৈরিতে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। উৎপাদনে আরও আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।

গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, পোশাকশ্রমিকদের মজুরি গত এক দশকে তিন দফা বেড়েছে। তার আগের দশকের চেয়ে এটি সন্তোষজনক হলেও শ্রমিকদের উন্নত জীবনমান এখনো নিশ্চিত হয়নি। সেটি করা দরকার।

খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বিশ্বব্যাপী কৃত্রিম তন্তুর পোশাকের চাহিদা বেড়েছে। বাংলাদেশ এই জায়গায় পিছিয়ে। কৃত্রিম তন্তুর কাপড় উৎপাদনে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকার ১০ শতাংশের মতো নগদ সহায়তা দিতে পারে। তিনি আরও বলেন, আগামী দিনে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নারী শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। বর্তমান শ্রমিকদের যে শিক্ষাগত যোগ্যতা, তা দিয়ে আধুনিক যন্ত্রপাতি চালানো মুশকিল। সে কারণে নিয়োগে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাস করা উচিত।

ব্র্যাকের পরিচালক মৌটুসী কবিরের সঞ্চালনায় তৃতীয় অধিবেশনে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন করা না গেলে পণ্য উৎপাদনের খরচ কমানো যাবে না। আমরা শ্রমিকের দক্ষতা, উৎপাদন সক্ষমতা ও উদ্ভাবন বাড়াতে কাজ করছি। টেকসই সরবরাহ ব্যবস্থা গড়তে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

ফারুক হাসান আরও বলেন, ‘বৈশ্বিক পোশাক রপ্তানির মাত্র ৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ আমাদের দখলে। তার মানে আমাদের রপ্তানি বাড়ানোর আরও সুযোগ রয়েছে। সে জন্য আমাদের পরিমাণের চেয়ে বেশি মূল্যের পণ্য উৎপাদনের দিকে যেতে হবে।’

এটুআই প্রকল্পের পলিসি অ্যাডভাইজার অনির চৌধুরী বলেন, নিউক্লিয়ার বা পরমাণু শক্তি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন ছাড়াও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো যায়। তেমনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ঠিকঠাকমতো ব্যবহার করতে না পারলেও ধ্বংস অনিবার্য। তিনি বলেন, অটোমেশনের ফলে কম্পিউটার চালানো, নকশা উন্নয়ন ও মান নিয়ন্ত্রণের মতো নতুন নতুন পদে কর্মসংস্থান হবে। এগুলো উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন কাজ। এসব কাজের জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়া না গেলে তা পার্শ্ববর্তী দেশের দক্ষ লোকজনের কাছে চলে যাবে।

সিপিডি নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, পোশাকশিল্পে নারী শ্রমিকের সংখ্যা কমে ৫৭-৬০ শতাংশে নেমে গেছে। নতুন যন্ত্রপাতি চালানোর দক্ষতায় পিছিয়ে থাকার কারণে নারী শ্রমিকের সংখ্যা কমছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here