করোনা সংক্রমণ রোধে আগামী ১ জুলাই থেকে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। চলমান পরিস্থিতিতে তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা পূর্বের শর্ত মেনেই অথবা নতুন শর্ত সাপেক্ষে কারখানা খোলা রাখতে চান। এনজ্য মালিক-শ্রমিক স্বার্থ, আন্তর্জাতিক বাজার এবং ক্রেতা ধরে রাখার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা।
ব্যবসায়ীদের মতে, জীবনের নিরাপত্তা আগে, এটা সব সময় সব অবস্থায় সত্য। তবে জীবন ধারণের জন্য জীবিকারও দরকার রয়েছে। বর্তমানে করোনা মহামারি বৈশ্বিক সমস্যা। এর মধ্যেই টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের শীর্ষ খাত হিসেবে তৈরি পোশাক খাত বিশেষ অবদান রাখছে। তাই এ খাতের কার্যক্রম বন্ধ থাকলে অনেক সমস্যায় পড়তে হবে।
খাত সংশ্লিষ্টরা যে কারণে কারখানা খোলা রাখতে চান সেগুলো হলো
১. তৈরি পোশাক খাত বন্ধ থাকলে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে উঠবে।
২. ব্যাংক ঋণ ও সংশ্লিষ্ট খাতের সঙ্গে সংযোগ শিল্পখাতও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
৩. শ্রমিকরা কর্মস্থলে না থেকে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করবে এবং মালিক লোকসানের সম্ভাবনায় ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিলে শ্রমিক অসন্তোষ ও বেকার সমস্যা দেখা দেবে
৪. শ্রমিকদের বেতন বকেয়া হতে পারে।
৫. ঈদ সামনে রেখে বোনাস প্রাপ্তিতে জটিলতা তৈরি হবে।
৬. উৎপাদন বন্ধ থাকলে মালিক পক্ষ লোকসানসহ দেউলিয়া হতে পারে।
বাংলাদেশ এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ইএবি) সভাপতি সালাম মুর্শেদী লকডাউনে তৈরি পোশাক কারখানা খোলা রাখার বিষয়ে রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমরা বলছিনা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করবো। কঠোর লকডাউনের যে শর্ত তা মেনেই কাজ করতি চাচ্ছি। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ও সরকারের পক্ষ থেকে আরোপিত শর্ত পরিপালন করেই এখন শিল্প কারখানা চলছে।’
তিনি বলেন, ‘সবাইকে একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে জীবন আগে, তবে জীবিকারও দরকার রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরতদের মাঝে করোনার প্রভাব খুব কম। এর অন্যতম কারণ, আমাদের কারখানাগুলো এমনিতেই শ্রমিক নিরাপত্তার বিষয় মাথায় রেখে স্থাপন করা। এখন করোনার কারণে এটি আরও গুরুত্ব দিয়ে পালন করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কারখানয় যে সময়টায় শ্রমিকরা থাকেন, সেই সময় নিরাপদ থাকেন। এছাড়া, খারখানার বাইরেও যেন তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন সেই বিষয়েও সতর্ক করা হচ্ছে।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণ রোধে সারাদেশে ১ জুলাই থেকে এক সপ্তাহের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ দেওয়া হবে। তবে এ সময়ে শিল্প কারখানা ও গার্মেন্টস খোলা থাকবে কি না সেই বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে মঙ্গলবার।