Home বাংলা নিউজ নতুন অ্যাকর্ড চায় না বিকেএমইএ

নতুন অ্যাকর্ড চায় না বিকেএমইএ

বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিকেএমইএ কারখানার কর্মপরিবেশ ও সুরক্ষা নিশ্চিতে আগের অ্যাকর্ডের ধারাবাহিকতায় রিটেইল কোম্পানি এবং আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়নগুলোর নতুন চুক্তি নিয়ে আপত্তি তুলেছে৷

ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকদের একটি সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন বিকেএমইএ-এর সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘‘বাংলাদেশের আদালতের নির্দেশে অ্যাকর্ডের পরিসমাপ্তি ঘটেছে৷ অন্য কোনো নামে অন্য কোনো উদ্যোগ নিয়ে তাদের আর বাংলাদেশে ফিরে আসার সুযোগ নেই৷”

তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ড এবং রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের কর্মপরিবেশ নিয়ে যখন নানামুখি আলোচনা শুরু হয়েছিল, সেই প্রেক্ষাপটে কারখানা পরিদর্শনে ইউরোপীয় ২২৮টি ক্রেতার সমন্বয়ে গঠিত হয় অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশ, যা সংক্ষেপে অ্যাকর্ড নামে পরিচিতি পায়৷

পরে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে ব্যাপকভিত্তিক সংস্কার কাজ শুরু হয়৷ দেড় হাজারের বেশি কারখানার অবকাঠামো উন্নয়ন, আগুন থেকে সৃষ্ট দুর্ঘটনা কমিয়ে আনা, শ্রমিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে বাস্তবায়ন করা হয় বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা, যেখানে ২০ লাখের মত কর্মী কাজ করে৷ আগের অ্যাকর্ডের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩১ অগাস্ট৷ তার আগেই নতুন একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাকর্ড, যা ১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে৷ 

বুধবার বাংলাদেশ অ্যাকর্ডের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নতুন এই চুক্তির নাম হবে ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকর্ড ফর হেলথ অ্যান্ড সেইফটি ইন দ্য টেক্সটাইল অ্যান্ড গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি’৷ আগের চুক্তির শর্তগুলোর সঙ্গে নতুন কিছু বিষয় এই নতুন চুক্তিতে যুক্ত করা হয়েছে৷ ভবিষ্যতে অন্য দেশেও এ ধরনের চুক্তি করার বিষয়ে পক্ষগুলো সম্মত হয়েছে৷

রয়টার্স জানিয়েছে, রিটেইল কোম্পানি এবং ট্রেড ইউনিয়নগুলোর মধ্যে এই চুক্তির ফলে কারখানার কর্মপরিবেশ ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে মালিকপক্ষের মত চুক্তিতে থাকা আন্তর্জাতিক ক্রেতাদেরও আইনি বাধ্যবাধকতা থাকবে৷ 

এ প্রসঙ্গে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘‘তারা আমাদের জন্য অনেক করেছে৷ ইতোমধ্যে তাদের উদ্যোগে বাংলাদেশের কারখানা নিরাপত্তার বিষয়গুলো যথেষ্ট পরিমাণে সুনিশ্চিত হয়েছে৷ এখন অ্যাকর্ডের নামে কোনো ধরনের উদ্যোগ প্রয়োজন নেই বলে আমরা মনে করি৷”  

নতুন অ্যাকর্ডের এই উদ্যোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকদের সঙ্গে ‘কোনো ধরনের আলোচনা করা হয়নি’ মন্তব্য করে এই বিকেএমইএ নেতা বলেন, ‘‘বাংলাদেশ এখন পোশাক রপ্তানিতে অনেকটাই সক্ষম ৷ তাদের এ ধরনের উদ্যোগে বাধা দেওয়ার মত সক্ষমতাও আমাদের রয়েছে৷”

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসানকে ফোন করা হলে তার সাড়া পাওয়া যায়নি৷ আগের অ্যাকর্ডে যে আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়নগুলো সই করেছিল, তারা নতুন চুক্তিতেও রয়েছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে৷

২০১৩ সালের অ্যাকর্ডে প্রায় ২০০ রিটোইলার সই করেছিল, যাদের মধ্যে ছিল এইচঅ্যান্ডএম, ইনডিটেক্স, ইউনিক্ল, হুগো বস আর অ্যাডিডাসের মত বড় কোম্পানিগুলো৷ নতুন চুক্তির তালিকা প্রকাশ করা হবে ১ সেপ্টেম্বর৷

টার্গট, ওয়ালমার্ট, ভিএফ কর্পোরেশনের মত বড় মার্কিন কোম্পানিগুলো অ্যাকর্ডে যুক্ত হতে আপত্তি তোলে ২০১৩ সালে ৷ পরে তারা অ্যালায়েন্স নামে আলাদা জোট করে চুক্তিতে আসে, কিন্তু সেখানে রিটেইলারদের চুক্তি মানতে আইনি বাধ্যবাধকতায় আনার সুযোগ ছিল না৷

রয়টার্সকে ওয়ালমার্ট জানায়, নতুন অ্যাকর্ডে তারা যুক্ত হয়নি৷ এ বিষয়ে টার্গেট এবং ভিএফ করপোরেশনের কাছ থেকে রয়টার্স কোনো জবাব পায়নি৷  

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here