Home বাংলা নিউজ প্রণোদনা ঋণ পরিশোধে ৩ বছর সময় চায় পোশাক মালিকরা

প্রণোদনা ঋণ পরিশোধে ৩ বছর সময় চায় পোশাক মালিকরা

পোশাক শিল্পের কর্মীদের বেতন-ভাতা পরিশোধে ১০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনার ঋণ দেড় বছরের মধ্যে ১৮টি কিস্তিতে পরিশোধের সময় বেঁধে দিয়েছে সরকার। যার প্রথম কিস্তি শুরু হবে আগামী অক্টোবর থেকে। কিন্তু এরই মধ্যে পোশাক মালিকরা প্রণোদনার এই অর্থ ফেরত দিতে ৩ বছর সময় চেয়েছে।

পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পক্ষ থেকে সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে চিঠি দিয়ে সময়সীমা বাড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, তারা ১৮ কিস্তির পরিবর্তে ৩ বছরে ৩৬ কিস্তিতে এ ঋণ পরিশোধ করতে চান। ২২ আগস্ট দেওয়া চিঠিতে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে বলা হয়, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এবং ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে আরও গভীর সংকটের মুখে পড়েছে তৈরি পোশাক শিল্প। এ শিল্পের মালিকরা পোশাক শিল্পের ভবিষ্যৎ, বিনিয়োগ পরিস্থিতি ও শ্রমিকদের মজুরিসহ অন্যান্য কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বিজিএমইএর এই চিঠির বিষয়টি যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছে।

বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান স্বাক্ষরিত চিঠিতে মূল বক্তব্য হিসেবে বলা হয়, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ এবং ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে বিদেশি ক্রেতারা অর্ডার কমিয়ে দিয়েছে। এছাড়া রপ্তানি করা পণ্যের মূল্য পরিশোধে অনেক ক্রেতা প্রতিষ্ঠান সময় নিচ্ছেন। অধিকাংশ ক্রেতা সময়মতো মূল্য পরিশোধ করছেন না। নির্দিষ্ট সময়ে পেমেন্ট না পাওয়ার কারণে শিল্পে তারল্য সংকট ক্রমেই বাড়ছে। তাই এই সংকটকালীন সময়ে কর্মীদের বেতন-ভাতা দেওয়ার জন্য প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধে কিস্তির সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন।

এই বিষয়ে বিকেএমইএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. হাতেম বৃহস্পতিবার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘ঋণের কিস্তি পরিশোধ করার মতো পরিস্থিতি এখনো পোশাক শিল্পে তৈরি হয়নি। এতদিন শুধু টিকে থাকার চেষ্টা করা হয়েছে। দীর্ঘদিন পর এ খাতে নতুন অর্ডার পাওয়া যাচ্ছে। আশা করছি, ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা তৈরি হবে মালিকদের। এজন্য প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তির মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।’

এই বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (বাজেট) সিরাজুন নুর চৌধুরী বলেন, ‘বিজিএমইএ প্রণোদনা ঋণের কিস্তি পরিশোধের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়ে চিঠি দিয়েছে। তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এর আগেও একবার কিস্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। এরপর কিছু কিস্তি পরিশোধও করেছেন তারা। নতুন করে বিজিএমইএ কিস্তি সংখ্যা বাড়ানোর যে প্রস্তাব দিয়েছে সেটি আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

মহামারি করোনায় পোশাক খাত ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। ২০২০ সালের এপ্রিলে এই খাতের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধে প্রথমে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার। পরে এর পরিমাণ বেড়ে ১০ হাজার ৫শ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়। ঋণের প্রথম কিস্তি পরিশোধের মেয়াদ ছিল ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে। এরপর বিজিএমইএর পক্ষ থেকে কিস্তি পরিশোধের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয়। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ পরিশোধের গ্রেস পিরিয়ড ৬ মাস দিয়ে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধির সার্কুলার জারি করে।

সার্কুলারে বলা হয়, অক্টোবর থেকে ১৮ মাসের মধ্যে ১৮টি সমান কিস্তিতে উদ্যোক্তারা এই টাকা পরিশোধ করবেন। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এ শিল্পকে আবারও বড় ধরনের চাপের মুখে ফেলে দেয়। এর ফলে সংকট ঘনীভূত হয়ে গত এপ্রিল থেকে পুরো পরিস্থিতি পালটে যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here