Home বাংলা নিউজ পরিবেশবান্ধব পোশাক শিল্প গড়ার পথে আরও অগ্রগতি

পরিবেশবান্ধব পোশাক শিল্প গড়ার পথে আরও অগ্রগতি

পূর্ণাঙ্গ পরিবেশবান্ধব পোশাক শিল্প গড়ার পথে আরও অগ্রগতি লাভ করেছে বাংলাদেশ। দেশে নতুন করে সবুজ কারখানার স্বীকৃতি পেয়েছে আরও দুটি কারখানা।

গত ২৭ জানুয়ারি গাজীপুরের জেএল ফ্যাশনস লিমিটেড এলইইডি ও+এম এর জন্য ভবনে ভি৪.১ রেটিংয়ে মোট ৮৪ পয়েন্টে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) থেকে একটি প্লাটিনাম সার্টিফিকেট পেয়েছে।

এছাড়া গাজীপুরের অ্যাডমিন ও ডে কেয়ার বিল্ডিং ও এলইইডি বিডি+সি এর সঙ্গে প্ল্যাটিনাম স্বীকৃতি পেয়েছে। তারাও মোট ৮৪ পয়েন্ট পেয়েছে।

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) তথ্য অনুসারে, দেশের পোশাক শিল্পে এখন পর্যন্ত ১৮৬টি কারখানার এলইইডি সার্টিফিকেশন রয়েছে।

২০২৩ সালের জানুয়ারিতেই তিনটি কারখানা ইউনিট এলইইডি সার্টিফিকেশন পেয়েছে।

২০২২ সালে মোট ৩০ কারখানা ইউনিট এলইইডি সার্টিফিকেশন পেয়েছে, যা এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

বর্তমানে, দেশের পোশাক শিল্পে প্ল্যাটিনাম ক্যাটাগরিতে ৬২টি, স্বর্ণ ১১০টি, সিলভারে ১০টি ও আরও চারটি এলইইডি প্রত্যয়ন পেয়ে ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিটে নিজেদের অবস্থান সুসংহত করেছে।

বিজিএমইএ জানায়, এর বাইরে ৫৫০টি কারখানা হয় নিবন্ধিত বা ইউএসজিবিসি এর এলইইডি সার্টিফিকেশনের অপেক্ষায় রয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সবুজ কারখানার দিক দিয়ে তৈরি পোশাক খাতের অগ্রগতিতে বিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ। এমন কারখানা শুরু করতে প্রথমে অতিরিক্ত ব্যয় লাগলেও পরে এতে অন্যান্য অনেক খরচ কমে আসে।

বিজিএমইএর তথ্য বলছে, সবুজ কারখানাগুলো ৪০% প্রাকৃতিক শক্তি, পানি ৩০% ও কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমনকে আরও সহজ করে। এতে করে পরিবেশগত সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।

এজন্য কারখানার মালিকদের যেমন ভবন নির্মাণের জন্য নির্দিষ্ট মানদণ্ড মেনে চলতে হয়। তেমনই কারখানাগুলো কর্মীদের জন্য নিরাপদ কাজের পরিবেশ দেয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্থায়িত্ব, জলবায়ু পরিবর্তন, ভূগর্ভস্থ পানি হ্রাস এবং দক্ষতার ক্রমবর্ধমান সমস্যা মোকাবেলা করে বাংলাদেশের পোশাক শিল্প এখন বিশ্বব্যাপী নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।

বিজিএমইএ কর্মকর্তারা উন্নয়নশীল পোশাক খাতে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশকে একটি সবুজ ক্ষেত্র হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

শনিবার (২৮ জানুয়ারি) দুটি সবুজ কারখানা পরিদর্শনকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত ও প্রধান প্রতিনিধি চার্লস হোয়াইটলি বাংলাদেশের তৈরি পোশাক (আরএমজি) সেক্টরের সবুজ রূপান্তরকে সাধুবাদ জানান।

তিনি বলেন, “ইইউ বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় গ্রাহক হিসেবে গর্বিত।”

ঢাকা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, “বিপুল সংখ্যক কারখানার ইউনিট পাইপলাইনে থাকায় তারা গত বছরের অর্জনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।”

তিনি আরও বলেন, অর্ডার ও ভোক্তাদের ব্যবহার ক্ষমতা কমে যাওয়ার পাশাপাশি উৎপাদন খরচ, জ্বালানি ও জ্বালানি খরচ বেড়েছে।”

তিনি বলেন, “টেকসই, পরিবেশ বান্ধব এবং মূল্য সংযোজন কারখানা থেকে উৎপাদিত পণ্যের মাধ্যমে ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে হবে। নির্মাতাদের অর্ডার দেওয়ার সময় ক্রেতাদের এই বিষয় বিবেচনায় নেওয়ার জন্য অনুরোধ করতে হবে।”

এছাড়া সবুজ কারখানার জন্য সরকারের সহায়তারও আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, “আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী। সবুজ কারখানার সংখ্যা বাড়ছে। সম্প্রতি ১৮টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিরা সবুজ কারখানা পরিদর্শন করেছেন যা আমাদের আশাবাদী করেছে।”

পোশাক প্রস্তুতকারকদের মতে, রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর গ্রিন ফ্যাক্টরি বিল্ডিংয়ের দিকে অগ্রসর হওয়া বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করেছিল। ওই ঘটনায় ১,১৩৪ জন প্রাণ হারান ও ২,০০০ হাজার জনের বেশি আহত হন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here