Home বাংলা নিউজ পোশাক খাতে বিদেশিদের নিরাপত্তায় তালিকা হচ্ছে

পোশাক খাতে বিদেশিদের নিরাপত্তায় তালিকা হচ্ছে

পোশাক খাতে বিদেশিদের নিরাপত্তায় তালিকা হচ্ছে

গুলশানে হলি আর্টিসান বেকারি এবং কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় সম্প্রতি জঙ্গি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিদেশিদের নিরাপত্তায় বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে পোশাক খাতে বিদেশি শ্রমিক এবং কর্মকর্তাদের তালিকা করা হচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তালিকা তৈরির কাজ শেষ করবে শিল্পাঞ্চল পুলিশ। তৈরি পোশাক উৎপাদক এবং রফতানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ নেতাদের সঙ্গে গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে বিস্তারিত পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এদিকে হামলার পর ক্রেতাদের মনোভাব জানা এবং বিদেশিদের নিরাপত্তায় নেওয়া উদ্যোগ সম্পর্কে জানানোর জন্য এদেশে বিদেশি ক্রেতাদের প্রতিনিধিদের সংগঠন বায়ার্স ফোরামের সঙ্গে বৈঠক করার চেষ্টা করছে বিজিএমইএ।

শতভাগ রফতানিমুখী শিল্প হিসেবে পোশাক শিল্পকে ঘিরে প্রতিদিনই অনেক বিদেশি বাংলাদেশে আসেন। হলি আর্টিসানের হামলায় নিহত ২০ জনের বেশির ভাগই এ দেশের পোশাক খাতের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিলেন। এ ছাড়া পোশাক খাতে অন্তত ১৬ হাজার বিদেশি কাজ করছে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। তবে প্রকৃতপক্ষে কী পরিমাণ বিদেশি কর্মী কাজ করছে তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। বিদেশিদের নিরাপত্তায় কৌশল নির্ধারণে সঠিক সংখ্যা জানতে কাজ শুরু করেছে শিল্পাঞ্চল পুলিশ।

জানতে চাইলে শিল্পাঞ্চল পুলিশের মহাপরিচালক আব্দুস সালাম সমকালকে বলেন, সাভার, আশুলিয়া, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে পোশাক খাতে কী পরিমাণ বিদেশি কাজ করছেন, সে তালিকা তৈরির কাজ চলছে। এসব বিদেশির এ দেশে কাজের বৈধ অনুমতি আছে কি-না সে বিষয়গুলোও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারখানা মালিকদের কাছ থেকেও এ বিষয়ে তথ্য নিয়েছেন তারা। তিনি বলেন, কেবল নিরাপত্তা নয়, দেশে প্রকৃত বিদেশি কর্মীর সংখ্যা জানার জন্যও এ হিসাব প্রয়োজন। আগামী সপ্তাহ নাগাদ তালিকার কাজ শেষ করা যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান সমকালকে বলেন, হামলার পর পরই সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার বিষয়ে বিদেশি ক্রেতা প্রতিনিধিদের আশ্বস্ত করেছেন তারা। কোনো ক্রেতা সফর বাতিল করেছেন বলে বিজিএমইএর কাছে তথ্য নেই বলে জানান তিনি। পোশাক খাতে সংস্কারবিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন উত্তর আমেরিকার ক্রেতাদের জোট অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার সেফটির সঙ্গে এরই মধ্যে এ নিয়ে বৈঠক হয়েছে। আগামী সোমবার ইউরোপের ক্রেতাদের জোট অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশের সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠক হবে বলে জানান সিদ্দিকুর রহমান।

বিজিএমইএর সঙ্গে বৈঠকের পর এদেশ থেকে পোশাক আমদানি অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিজিএমইএর এক পরিচালক সমকালকে জানান,কানাডার ব্র্যান্ড সিয়ার্সের একটি প্রতিনিধি দল থাইল্যান্ড, ভারত ও বাংলাদেশ সফরে আসার কথা ছিল। কিন্তু সিয়ার্স বাংলাদেশ সফর বাতিল করেছে। কারখানা মালিককে থাইল্যান্ডে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। গতকালই ওই উদ্যোক্তা থাইল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন। একই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন উদ্যোক্তা। এদিকে এই হামলার কারণে আগামী ১৮ জুলাই অনুষ্ঠেয় ইউএস কটন কাউন্সিলের ঢাকায় একটি পূর্বনির্ধারিত বৈঠক বাতিল করা হয়েছে। বাংলাদেশের অন্যতম বড় ক্রেতা প্রতিষ্ঠান এইচঅ্যান্ডএম আগামী সেপ্টেম্বরে ঢাকায় বিপুল সংখ্যক দেশি-বিদেশির অংশগ্রহণে একটি বড় আকারে প্রদর্শনীর আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছিল। ওই অনুষ্ঠানও স্থগিত করা হয়েছে।