Home বাংলা নিউজ গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জমির স্বল্পতায় বাধাগ্রস্ত বস্ত্র খাতের বিনিয়োগ

গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জমির স্বল্পতায় বাধাগ্রস্ত বস্ত্র খাতের বিনিয়োগ

বস্ত্র খাতের কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জমির স্বল্পতাকে প্রধান প্রতিবন্ধকতা বলে আখ্যায়িত করেছেন এ খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিটিএমএর সভাপতি ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা তপন চৌধুরী।

তপন চৌধুরী বলেন, বর্তমানে বস্ত্র খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ ৬০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি। গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এ খাতের জন্য বিদেশ থেকে ৮ হাজার ৩২২ কোটি টাকার যন্ত্রপাতি আমদানি করা হয়। এ ক্ষেত্রে আগের বছরের চেয়ে ১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে রাজনৈতিক ও ব্যাংকঋণের সুদ হার অনুকূল থাকার পরও ১১ প্রবৃদ্ধি আশানুরূপ নয়। বিটিএমএ সভাপতি বলেন, গ্যাস, বিদ্যুৎ-সংকট ও জমির স্বল্পতা এ খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করছে। বিদ্যমান কারখানা সম্প্রসারণে প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের নিশ্চয়তা পাওয়া যাচ্ছে না।

২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া বস্ত্র ও পোশাক কারখানার যন্ত্রপাতির চার দিনের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তপন চৌধুরী এসব কথা বলেন। বস্ত্রকল-মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ), হংকংয়ের প্রতিষ্ঠান ইয়র্কারস ট্রেড অ্যান্ড মার্কেটিং সার্ভিসেস ও তাইওয়ানের চ্যান চাও ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি যৌথভাবে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে বস্ত্রকল-মালিকদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, বিচ্ছিন্নভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গড়ে ওঠা শিল্পকারখানায় বিদ্যুৎ সরবরাহে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে, তাতে এ শিল্পের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবে কি না? জবাবে তপন চৌধুরী বলেন, নতুন করে যারা এ খাতে বিনিয়োগ করছে, তারা বিনিয়োগের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলকে (এসইজেড) গুরুত্ব দিচ্ছে। কিন্তু বিদ্যমান কারখানাগুলো চাইলেও রাতারাতি কারখানা স্থানান্তর সম্ভব নয়। তাই বিদ্যমান কারখানার সম্প্রসারণও নিশ্চিত করতে হবে।

সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে এসইজেডগুলোর দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান বিটিএমএ সভাপতি। তিনি বলেন, শিল্পের সব ধরনের সুবিধা পেলে দেশীয় বিনিয়োগকারীরা এ খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে ও রপ্তানি আয় বাড়াতে হলে বস্ত্র খাতকে এখন উচ্চ মানের কাপড় তৈরির দিকে যেতে হবে বলে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) চার দিনের এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম। প্রদর্শনীতে বিশ্বের ৩৩টি দেশের মেশিনারিজ প্রস্তুতকারক এক হাজার প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে।

বিটিএমএ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশে ক্রমশ বিকশিত হচ্ছে বস্ত্র খাত। এ খাতের উদ্যোক্তাদের প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মেশিনারির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে হচ্ছে। এ বিবেচনা ও দায়বদ্ধতা থেকে ২০০৪ সাল থেকে বিটিএমএ নিয়মিতভাবে যন্ত্রপাতি প্রদর্শনীর আয়োজন করে আসছে। এ ধরনের প্রদর্শনীর মাধ্যমে উদ্যোক্তারা আধুনিক ও নিত্যনতুন যন্ত্রপাতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পাশাপাশি কেনারও সুযোগ পাচ্ছে। এ কারণে গত বছরের প্রদর্শনীতে ২৫ কোটি মার্কিন ডলারের তাৎক্ষণিক ক্রয়াদেশ বা স্পট অর্ডার পাওয়া গিয়েছিল। এ বছরের প্রদর্শনী থেকে গতবারের চেয়ে বেশি তাৎক্ষণিক ক্রয়াদেশ আসবে বলে আশা করছেন তপন চৌধুরী।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিটিএমএর সহসভাপতি হোসেন মাহমুদ, পরিচালক খোরশেদ আলম, মোশারফ হোসেন প্রমুখ।

আয়োজকেরা জানান, প্রদর্শনীটি প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। বিটিএমএ সভাপতি বলেন, ২০০৪ সাল থেকে এ ধরনের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর আয়োজন শুরু হয়েছে। এবারের আয়োজনটি বিটিএমএর ১৪তম প্রয়াস।