Home বাংলা নিউজ ইউরোপে জিএসপি অব্যাহত থাকবে

ইউরোপে জিএসপি অব্যাহত থাকবে

শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশকে আরো বেশি কাজ করার তাগিদ দিয়ে সফরকারী ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদল বলেছে, ইউরোপে বাংলাদেশি পণ্যের জিএসপি সুবিধা অব্যাহত থাকবে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রত্যাশার কথা জানিয়ে তারা বলেছে, শ্রম আইন অনুযায়ী বাংলাদেশের শ্রমিকরা সব ধরনের অধিকার ভোগ করুক তা তারা চায়। বাংলাদেশ ইউরোপের বাজারে অস্ত্র বাদে সব পণ্যে (ইবিএ) জিএসপি পায়।

গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে বৈঠকের পর ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদলের প্রধান আর্নি লিয়েট বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ইবিএর আওতায় ইইউ বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ভবিষ্যতে এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। তবে ইইউ চায় শ্রম আইন মোতাবেক বাংলাদেশের শ্রমিকরা অধিকার ভোগ করুক। শ্রমিক অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। কারণ এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আরো বেশি কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

এই প্রতিনিধিদলটির বাংলাদেশ সফরের বার্তা দিয়ে গত ১০ মার্চ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ই-মেইল পাঠিয়েছিলেন ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর (কমার্স) এবং কমার্স উইংয়ের প্রধান মোহাম্মদ জহিরুল কাইয়ুম। তাতে তিনি জিএসপি স্থগিতের আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেছিলেন, ‘ইউরোপীয় কমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্রাসেলস দূতাবাস নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। তবে কমিশন একটি বার্তাই বারবার দিচ্ছে, তা হলো, বাংলাদেশের শ্রমিক অধিকার রক্ষা ও শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার বাংলাদেশ কবে নাগাদ কিভাবে বাস্তবায়ন করবে সে সম্পর্কে একটি পরিকল্পনা বা রোডম্যাপ আগামী মে মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় সাসটেইনেবিলিটি কমপ্যাক্টের বৈঠক ও জুনে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠেয় বিশ্ব শ্রম সংস্থার (আইএলও) সম্মেলনে জানাতে হবে। অন্যথায় ইবিএ হারানোর ঝুঁকি নিতে হবে, বাংলাদেশকে দেওয়া জিএসপি স্থগিত করা হবে। ’

প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পর বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ইইউর দেওয়া ইবিএর জিএসপি সুবিধা থাকবে। পোশাক কারখানার শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও কল্যাণে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করেছে প্রতিনিধিদল। ইইউর দেওয়া পরামর্শ মোতাবেক ও আইএলওর বিধান অনুযায়ী সরকার শ্রমিক অধিকার রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিচ্ছে। শ্রমিকদের সিবিএ করার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। ইপিজেডভুক্ত কারখানাগুলোর শ্রমিকরা ওয়ার্কার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন গঠন করে ট্রেড ইউনিয়নের মতোই সুবিধা ভোগ করছে। ফলে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। বাংলাদেশে এখন কর্মবান্ধব ও নিরাপদ ‘সবুজ কারখানা’ গড়ে উঠছে। কারখানা কমপ্লায়েন্স করতে গিয়ে মালিকদের বিনিয়োগ বাড়ছে। প্রতিবছর শ্রমিকরা ৫ শতাংশ হারে ইনক্রিমেন্ট পাচ্ছে। কিন্তু ক্রেতারা পোশাকের দর বাড়াচ্ছে না। বাংলাদেশের পোশাকের দর বাড়ানো দরকার।

মন্ত্রী জানান, গত বছর বাংলাদেশ ৩৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। এর মধ্যে ১৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে ইইউভুক্ত দেশগুলোতে। শতকরা হিসাবে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৫৪ ভাগ ইউরোপে যায়। ইউরোর দরপতন না ঘটলে সেখানে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেত।