Home Bangla Recent পোশাক শিল্প নিয়ে এখনও নেতিবাচক প্রচারণা চলছে

পোশাক শিল্প নিয়ে এখনও নেতিবাচক প্রচারণা চলছে

সাভারের রানা প্লাজা দুর্ঘটনা-পরবর্তী সময়ে নানামুখী সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণের ফলে দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের কর্মপরিবেশে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে বলে দাবি করেছে এ খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)। তবে নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও পোশাক শিল্প নিয়ে এখনও নেতিবাচক প্রচারণা চলছে বলে অভিযোগ সংগঠনটির। শনিবার রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পাঁচ বছর পূর্তি সামনে রেখে বিজিএমইএ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা, নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও চাকরি হারানোদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবুও পোশাক শিল্প নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা থেমে নেই।

রাজধানীর হাতিরঝিলে বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সিদ্দিকুর রহমান। এ সময় সংগঠনের সহ-সভাপতি (অর্থ) মোহাম্মদ নাছির ছাড়াও অন্য পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় আসছে বাজেটে পোশাক খাতের উন্নয়নে বেশকিছু দাবি তুলে ধরা হয়।সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, সঠিক তথ্য আড়াল করে কিছু কিছু এনজিও শ্রমিকদের নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা চালাচ্ছে। পোশাক খাতের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এগুলো বন্ধ করা দরকার। দুর্ঘটনা পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও ঘটে। অথচ রানা প্লাজা দুর্ঘটনার বর্ষ পূর্তি এলেই এটি নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়ে যায়। কিছু সংস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয় বিস্তারিত না জেনে প্রতিবেদন দিচ্ছে। এ শিল্পে কোটি লোকের জীবন-জীবিকা হয়। অথচ ২০০ জনের সঙ্গে কথা বলে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এসব প্রতিবেদন পোশাক খাতের জন্য ক্ষতিকর। সঠিক তথ্য না জেনে প্রতিবেদন প্রকাশ না করা এবং এ খাত নিয়ে আরও গঠনমূলক সমালোচনা করতে এনজিও এবং সুশীল সমাজসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান। সিদ্দিকুর রহমান বলেন, রানা প্লাজার পাঁচ কারখানার শ্রমিকদের বেতন ও পাওনাদি পরিশোধ, আহতদের চিকিৎসা ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনবাবদ প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। অভিযুক্ত পাঁচটি কারখানার সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে, মালিকদের আইনের কাছে আত্মসমর্পণ করতে সহায়তা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ও নিহত শ্রমিকদের পরিবারদের ২৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সহযোগিতায় গঠিত তহবিল থেকে ২৪০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে কারখানার অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্প্রিঙ্কলার, ফায়ার ডোরসহ দেশে তৈরি হয় না এমন সরঞ্জামের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে প্রি ফেব্রিকেটেড ম্যাটেরিয়াল আমদানির ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার এবং চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চলে গার্মেন্ট পার্ক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ দ্রুত বাস্তবায়নে সরকারের সহায়তা চাওয়া হয়। বিজিএমইএ সভাপতি আরও বলেন, দেশের পোশাক খাত অনেক পরিণত, কমপ্লায়েন্স মেনেই নতুন কারখানা হচ্ছে।

তিনি জানান, বাংলাদেশ এখন সবুজ শিল্পায়নে অগ্রণী ভূমিকায় রয়েছে। লিড সার্টিফাইড ১০টি কারখানার মধ্যে সাতটির অবস্থান বাংলাদেশে। ইউনাইটেড স্টেটস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল থেকে দেশের ৬৭ কারখানা লিড সনদ পেয়েছে। এগুলোর মধ্যে ১৩টি প্লাটিনাম কারখানা। আরও ২৮০টি কারখানা সনদ পাওয়ার পাইপলাইনে আছে। প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় ১ হাজার ১৩৮ জনের প্রাণহানি ঘটে। এ ঘটনায় ২ হাজারের বেশি শ্রমিক আহত হয়েছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here