Home Apparel গ্যাসের সংকট চরমে, বন্ধের ঝুঁকিতে ৬০% বস্ত্র কারখানা

গ্যাসের সংকট চরমে, বন্ধের ঝুঁকিতে ৬০% বস্ত্র কারখানা

ভয়াবহ গ্যাসসংকটের কারণে বস্ত্রশিল্পের উৎপাদন মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন। তিনি জানান, বস্ত্র উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল হচ্ছে গ্যাস। এই গ্যাসের সংকট এখন চরমে। দিনের অন্তত ১২ ঘণ্টা কারখানায় গ্যাস থাকে না।

কোনো কোনো এলাকায় সরবরাহ লাইনে গ্যাস থাকলেও পর্যাপ্ত চাপ না থাকায় উৎপাদন ৪০ শতাংশ কমে গেছে। বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছে অন্তত ৬০ শতাংশ কারখানা। এই খাতের কারখানার সংখ্যা এখন এক হাজার ৭০০। অন্তত ১০০ কোটি ডলারের রপ্তানি আদেশ এরই মধ্যে বাতিল হয়েছে। এ তালিকা আরো দীর্ঘ হতে পারে। জরুরি ভিত্তিতে গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক পর্যায়ে আনা না হলে ভয়বহ সংকট তৈরি হবে। এতে তৈরি পোশাক রপ্তানিও ব্যাহত হবে। বিদেশি মুদ্রার মজুদে আরো চাপ তৈরি হবে। গোটা অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। গতকাল শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব আশঙ্কার কথা জানিয়েছে বস্ত্র খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন। আর তাই জরুরি ভিত্তিতে স্পট মার্কেট (আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত বাজার) থেকে গ্যাস আমদানির অনুরোধ জানানো হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে। প্রয়োজনে গ্যাসের বেশি দাম দিতেও রাজি আছে তারা। রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে গ্যাসসংকটের পরিস্থিতি তুলে ধরেন বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন। এ সময় সংগঠনের সহসভাপতি ফজলুল হক, আব্দুল্লাহ আল মামুন, পরিচালক মোশাররফ হোসেন, আব্দুল্লাহ জোবায়ের, সৈয়দ নুরুল ইসলাম, মোনালিসা মান্নান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিটিএমএ সভাপতি বলেন, গত মার্চে গ্যাসের সংকট শুরু হয়। জুলাইয়ে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়। দিন দিন পরিস্থিতি খারাপ থেকে খারাপ হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার, নরসিংদীর মাধবদী, সাভার-আশুলিয়া, গাজীপুরের শ্রীপুর থেকে ধনুয়া, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের বস্ত্রকলগুলোতে দিনে অন্তত ১২ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকে। তিনি বলেন, বস্ত্রকলের প্রযুক্তিই এ ধরনের যে মেশিনে গ্যাসের সংযোগ পাওয়ার আরো দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর উৎপাদনে যাওয়া যায়। অর্থাৎ সব মিলিয়ে উৎপাদন বন্ধ থাকে প্রায় ১৫ ঘণ্টা। গ্যাসের এই আসা-যাওয়াও অনিয়মিত। কোনো কোনো এলাকায় বিকেল ৫টায় গ্যাস আসে। রাতে থাকে। সারা দিন থাকে না। এতে উৎপাদন-শৃঙ্খলাও বিঘ্নিত হচ্ছে। উৎপাদন ব্যয়ও বাড়ছে।

মোহাম্মদ আলী খোকন জানান, সারধাণত এক কেজি সুতা উৎপাদনে এক ডলার ২৫ সেন্টের মতো খরচ হয়। গ্যাসসংকটে ব্যয় বেড়ে আড়াই ডলারে পৌঁছেছে। কাপড় রং করার অর্থাৎ ডাইং ও ফিনিশিংয়ের মান খারাপ হচ্ছে। এ খাতে এক লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ এবং ১০ লাখ কর্মসংস্থান রয়েছে। তৈরি পোশাক রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশ কাঁচামালের জোগান দিচ্ছে বস্ত্রকলগুলো। এ ছাড়া ৮০ হাজার কোটি টাকার স্থানীয় বস্ত্র ও পোশাকের জোগান দিচ্ছে বস্ত্র খাত।

এর আগে উপস্থাপনায় বিটিএমএ সভাপতি বলেন, পেট্রোবাংলা থেকে দুই হাজার ৩০০ এমএমসিএফডি (মিলিয়ন কিউবিক ফিট পার এ ডে) এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) ৩৬০ এমএমবিটিইউ (ওয়ান মিলিয়ন ব্রিটিশ থারমাল ইউনিট) পাওয়ার কথা। বর্তমানে ইউনিটপ্রতি ১৬ টাকা ৩৩ পয়সা হারে গ্যাসের মূল্য পরিশোধ করছেন তাঁরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here