Home বাংলা নিউজ ৫ দিনের মেলায় ২০ লাখ ডলারের পোশাক রফতানির আদেশ

৫ দিনের মেলায় ২০ লাখ ডলারের পোশাক রফতানির আদেশ

rmg-worker

আইপিইউ সম্মেলনের মেলা থেকে বাংলাদেশ তাত্ক্ষণিকভাবে ২০ লাখ ডলার মূল্যের পোশাক রফতানির আদেশ পেয়েছে। অন্যদিকে বিশ্বনেতাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বাংলাদেশ অস্ত্র প্রতিযোগিতায় বিশ্বাস করে না, জনগণের কল্যাণে বিশ্বাস করে। এ কথা বাংলাদেশ স্পষ্টভাবেই জানিয়ে দিয়েছে বিশ্বনেতাদের। গত ১ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আইপিইউ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় ১২৮ বছরের পুরনো সংগঠন ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের ১৩৬তম সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ১২৬টি দেশের ৬০৭ সাংসদসহ সর্বমোট ১২০৬ জন প্রতিনিধি এতে অংশগ্রহণ করেন। বিশ্বের ৬৭ শতাংশ দেশের জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী এত বড়মাপের একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা। একই সঙ্গে তা গৌরবেরও। পাশাপাশি এর সফল পরিসমাপ্তি বাংলাদেশের সক্ষমতারও পরিচায়ক। বিদেশি অতিথিদের সামনে ডিসপ্লের মাধ্যমে তুলে ধরা হয় বাংলার ঐতিহ্য। সম্মেলন চলাকালে আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পশ্চিম পাশে মেলার আয়োজন করা হয়। মেলার বিভিন্ন স্টল থেকে পণ্যসামগ্রী ক্রয় করেন বিদেশি অতিথিরা। সম্মেলনকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও বাংলাদেশিদের আতিথেয়তায় মুগ্ধ বিশ্বনেতারা। গত বুধবার বিকেলে সম্মেলন শেষ হওয়ার পর ভেঙেছে বিশ্ব মিলনমেলা। বিদেশি অতিথিরা আন্তর্জাতিক কেন্দ্রে উপস্থিত বাংলাদেশের নেতা, আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ গণমাধ্যমের কর্মী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এ সময় তারা বলেন, ‘সুন্দর বাংলাদেশের মহত্ মানুষ।’ ব্রিটেন, উগান্ডা ও আফগানিস্তানসহ অন্য দেশগুলোর অতিথিরা বাংলার ঐতিহ্য আর বাংলাদেশিদের আতিথেয়তার ভূয়সী প্রশংসা করেন। আইপিইউর সেক্রেটারি জেনারেল এবং আইপিইউর মানবাধিকার কমিটির প্রেসিডেন্ট ফৌজিয়া কুফির মুখে শোনা গেছে, ‘সাবাস বাংলাদেশ। বিশ্ব তোমাদের পাশে।’ এ সময় উপস্থিত বাংলাদেশিদের মুখে সুকান্তের কবিতার লাইন উচ্চারিত হয়, ‘সাবাস বাংলাদেশ… এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়, জ্বলে-পুড়ে মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়।’ এসব বিষয় নিয়ে আইপিইউর সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ১৩৬তম এই সম্মেলনের আয়োজন আমাদের জন্য ছিল বড় একটি চ্যালেঞ্জ। এতগুলো দেশের প্রতিনিধিদের জন্য মানসম্মত আবাসনের ব্যবস্থা, তাদের নির্বিঘ্ন যাতায়াতের জন্য ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, সর্বোপরি তাদের জন্য প্রতিটি স্থানে যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ছিল অন্যতম মূল বিষয়। এ বিষয়গুলোর প্রত্যেকটিতে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ অন্য সংস্থাগুলোর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। এই সম্মেলনকে কেন্দ্র করেই বেশ কয়েক বছর আগে বাংলাদেশে জোটনিরপেক্ষ দেশগুলোর একটি সম্মেলন আয়োজনের সময় বিদেশি অতিথিদের আবাসন ব্যবস্থাপনার জন্য ‘ন্যাম ভবন’ নামে আলাদা ভবন তৈরি করেছিল। শেষ পর্যন্ত সেই সম্মেলন ঢাকায় অনুষ্ঠিত না হলেও বাংলাদেশ যে এমন ধরনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুত ছিল না, তা সে সময় অনেকেই বলেছেন। অথচ এবার তার চেয়েও বড় পরিসরের সম্মেলন বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই আয়োজন করল বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক মাপের সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ঢাকার ১৫টি পৃথক হোটেলে বিদেশি অতিথিদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়। স্পিকার বলেন, ১৩৬তম আইপিইউ অ্যাসেম্বলি সফলভাবে আয়োজন করতে পেরে বাংলাদেশ সত্যিই গর্বিত। এই অ্যাসেম্বলির বড় প্রাপ্তি হচ্ছে, এ ধরনের আন্তর্জাতিক মানের অ্যাসেম্বলি আয়োজন করার সামর্থ্য যে বাংলাদেশের আছে বিশ্বপরিমণ্ডলে তা তুলে ধরা। তিনি বলেন, সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিতকরণ ও স্বাধীন কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করাসহ বেশ কয়েকটি প্রস্তাবনা গ্রহণ করা হয়েছে, যা সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সার্বভৌমত্বকে সুরক্ষাদানে ভূমিকা রাখবে। স্পিকার বলেন, ঢাকা ঘোষণায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বৈষম্য কমানো, মানবাধিকার সুরক্ষা, আইনি কাঠামো শক্তিশালীকরণ এবং বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করার মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে, যা আইপিইউর কার্যক্রমকে সব দেশের মানুষের কল্যাণে আরও গতিশীল করবে। অন্যদিকে গতকাল আইপিইউর সেক্রেটারি জেনারেল মার্টিন চুনগং ১৩৬তম আইপিইউ অ্যাসেম্বলির সফল আয়োজনের জন্য স্পিকার ও ১৩৬তম আইপিইউ অ্যাসেম্বলির সভাপতি ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এই সম্মেলনের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে। এই সাক্ষাত্কালে পিএনএনডির প্রতিনিধি দলের প্রধান মনি শঙ্কর আয়ার বলেন, পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব বিনির্মাণে আমাদের সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। এজন্য তিনি বিশ্বের সব দেশের সহযোগিতা কামনা করেন। স্পিকার জবাবে বলেন, বাংলাদেশ অস্ত্র প্রতিযোগিতায় বিশ্বাস করে না, জনগণের কল্যাণে বিশ্বাস করে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য অন্যতম পূর্বশর্ত বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠা। রাজনৈতিক অঙ্গীকারই অর্থনৈতিক ভিতকে শক্তিশালী করতে পারে।