Home বাংলা নিউজ বস্ত্র খাতের জন্য বিশেষ তহবিল ও প্রণোদনা

বস্ত্র খাতের জন্য বিশেষ তহবিল ও প্রণোদনা

বস্ত্র খাতের প্রতিষ্ঠান সাধারণভাবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে চলতি মূলধন, মেয়াদি ঋণ বা অন্যান্য অর্থায়ন পেয়ে থাকে। এর বাইরে এসব কোম্পানি পুঁজিবাজার থেকে তহবিল সংগ্রহ করতে পারে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে দেশের বাইরে থেকেও ঋণ নিতে পারে। তবে সাধারণ অর্থায়নের

বাইরে এ খাতের জন্য রয়েছে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) থেকে স্বল্প সুদে পুনঃঅর্থায়ন নেওয়ার সুযোগ। অন্যদিকে সরকার রপ্তানিতে যেসব খাতে নগদ সহায়তা বা ভর্তুকি দেয়, তার মধ্যেও রয়েছে বস্ত্র খাত।

তহবিলের আকার :রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল বা ইডিএফ বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি বিশেষ তহবিল, যার মূল সুবিধাভোগী বস্ত্র ও তৈরি পোশাক খাত। এ তহবিল থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ দেওয়া হয়। বর্তমানে এর আকার ৫ বিলিয়ন বা ৫০০ কোটি ডলার। ১৯৮৯ সালে ইডিএফ চালু হয় বিশ্বব্যাংকের মাত্র ৫০ লাখ ডলারের তহবিল দিয়ে। দিনে দিনে তহবিলের আকার বেড়েছে। তহবিল থেকে ঋণগ্রহীতা ব্যাংক এবং পুনঃঅর্থায়ন পাওয়া উদ্যোক্তার সংখ্যা বেড়েছে। পাশাপাশি এর সুদহারও কমেছে।

কারা ঋণ পান :ইডিএফ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোকে ঋণ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক এই অর্থ সেই ধরনের উৎপাদক ও রপ্তানিকারকদের রপ্তানির জন্য ইনপুট বা কাঁচামাল আমদানির জন্য ঋণ দেয়। বস্ত্র, তৈরি পোশাক, চামড়া ও প্লাস্টিক খাতের উদ্যোক্তারাই মূলত এখান থেকে পুনঃঅর্থায়ন পান। বাংলাদেশ টেক্সটাইলস মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) এবং বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) এর কোনো সদস্য কারখানা বর্তমানে ইডিএফের আওতায় ৩ কোটি ডলার (প্রায় ২৫০ কোটি টাকা) পর্যন্ত ঋণ পায়। এর আগে এ সীমা ছিল আড়াই কোটি ডলার। করোনার অভিঘাত মোকাবিলায় গত বছরের ১৭ মে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঋণের সীমা বাড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক, যা আগামী জুন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। জুনের পর সীমা আগের জায়গায় যাবে, না কি বর্তমান অবস্থায় থাকবে, নাকি বাড়বে- সেই সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।

সুদের হার :শুরুর দিকে ইডিএফের সুদহার এখনকার চেয়ে অনেক বেশি ছিল। বর্তমানে ব্যাংকগুলোকে ইডিএফ থেকে মাত্র শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদে ঋণ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। গ্রাহকদের ব্যাংক দেয় মাত্র ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদে। করোনার কারণে গত বছরের ২৮ অক্টোবর জারি করা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই সুদহার কার্যকর রয়েছে, যার মেয়াদ চলতি মাসে শেষ হবে। এরপর সুদহার কী হবে তা জানা যায়নি। করোনার কারণে প্রথমবার সুদহার কমানো হয় গত বছরের এপ্রিলে। তখন ব্যাংকের জন্য ছিল ১ শতাংশ এবং গ্রাহকের জন্য ছিল ২ শতাংশ। এর আগে ইডিএফের সুদহার নির্ধারিত হতো ৬ মাস মেয়াদি লন্ডন আন্তঃব্যাংক অফার রেটের (লাইবর) মাধ্যমে। শেষ দফায় লাইবরকেন্দ্রিক সুদহার ছিল ২০১৮ সাল থেকে গত বছরের ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত। তখন ব্যাংকের জন্য সুদহার ছিল লাইবরের সঙ্গে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ। আর গ্রাহকের জন্য ছিল লাইবর যোগ দেড় শতাংশ। সাধারণত ব্যাংককে ১ শতাংশ মার্জিন দেওয়া হয়। ব্যাংকগুলোকে বাংলাদেশ থেকে তহবিল নেওয়ার ১৮০ দিনের মধ্যে ফেরত দিতে হয়। গ্রাহকের রপ্তানি আয়ের পুনর্বাসনে দেরি হলে যথাযথ ব্যাখ্যা দিয়ে ওই সময় ২৭০ দিন পর্যন্ত পরিশোধের মেয়াদ বাড়ানোর অনুমতি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

প্রণোদনা :সরকার প্রতি বছর যেসব খাতে উল্লেখযোগ্য অঙ্কের প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা দেয় তার মধ্যে বস্ত্র খাত অন্যতম। রপ্তানিমুখী দেশীয় বস্ত্র খাতে শুল্ক্ক বন্ড ও ডিউটি ড্র-ব্যাকের পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা রয়েছে ৪ শতাংশ। বস্ত্র খাতে নতুন পণ্য/নতুন বাজার (যুক্তরাষ্ট্র/ কানাডা/ ইইউ ছাড়া) সম্প্রসারণ সহায়তাও ৪ শতাংশ। এর বাইরে ইউরো অঞ্চলে বস্ত্র খাতের রপ্তানিকারকদের জন্য অতিরিক্ত ২ শতাংশ বিশেষ সুবিধা রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here