Home বাংলা নিউজ বাংলাদেশ থেকে বেশি দামে তৈরি পোশাক কিনবে বৈশ্বিক ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো

বাংলাদেশ থেকে বেশি দামে তৈরি পোশাক কিনবে বৈশ্বিক ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলো

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের উচ্চ মজুরি দেওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এইচঅ্যান্ডএম, গ্যাপসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক ফ্যাশন ব্র্যান্ড। তারা বাংলাদেশের কারখানাগুলো থেকে বেশি দামে তৈরি পোশাক কিনবে। এমন তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোর সংগঠন আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন (এএএফএ)। খবর রয়টার্সের

বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। চীনের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প খাতের শ্রমিকেরা আন্দোলন করছেন। এতে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষও হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে গত মঙ্গলবার সরকার নতুন মজুরি ঘোষণা করেছে। তাতে ন্যূনতম মাসিক মজুরি ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়িয়ে সাড়ে ১২ হাজার টাকা বা ১১৩ ডলার (প্রতি ডলার ১১০ টাকা ধরে) নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ডিসেম্বর মাস থেকে এটি কার্যকর হবে।

তৈরি পোশাক খাতে মোট উৎপাদন খরচের ১০–১৩ শতাংশ যায় শ্রমিকদের মজুরি হিসেবে। কারখানার মালিকেরা বলছেন, মজুরি বৃদ্ধির কারণে তাঁদের খরচ ৫–৬ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এতে তাঁদের লাভের পরিমাণ কমবে। এ জন্য বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলোর সহযোগিতা প্রত্যাশা করছেন বাংলাদেশের পোশাক কারখানার মালিকেরা। এ বিষয়ে আমেরিকান অ্যাপারেলের কাছে রয়টার্সের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল, বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলো ৫–৬ শতাংশ বেশি মূল্য দিয়ে পণ্য কিনবে কি না।

জবাবে আমেরিকান অ্যাপারেলের প্রধান নির্বাহী স্টিফেন ল্যামার বলেন, ‘অবশ্যই। মজুরি বৃদ্ধিকে সমর্থন করার জন্য আমাদের সদস্যরা দায়িত্বশীলভাবে ক্রয় অব্যাহত রাখবে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার আমরা এমন প্রতিশ্রুতির পুনরাবৃত্তি করেছি।’

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের খুচরা বিক্রেতারাই বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের প্রধান ক্রেতা। তবে মূল্যস্ফীতির চাপ ও ক্রেতা চাহিদা কমার কারণে ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোও তৈরি পোশাকের ক্রয়াদেশ কমিয়েছে।

আমেরিকান অ্যাপারেলের প্রধান নির্বাহী স্টিফেন ল্যামার জানান, বাংলাদেশি শ্রমিকেরা যেন সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের ফলে সুবিধাবঞ্চিত না হন, সে লক্ষ্যে তাঁরা কাজ করছেন। এ জন্য একটি বার্ষিক ন্যূনতম মজুরি পর্যালোচনা পদ্ধতি গ্রহণের আহ্বানও জানিয়েছেন তাঁরা।

রয়টার্স বলেছে, বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি তৈরি পোশাক খাত। বর্তমানে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ১৬ শতাংশ আসে এই খাত থেকে, যেখানে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ৪০ লাখ লোকের। মূলত তৈরি পোশাকশিল্পে কম মজুরির বিষয়টি বাংলাদেশেকে এ অবস্থায় পৌঁছাতে সহায়তা করেছে।

বাংলাদেশে এখন মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। এ জন্য মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় নিয়ে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির বিষয়টি বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলো বিবেচনা করছে। গত মাসে আমেরিকান অ্যাপারেলের বেশ কয়েকটি সদস্য প্রতিষ্ঠান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে মজুরি বৃদ্ধির অনুরোধ জানিয়েছে। আমেরিকান অ্যাপারেলের প্রধান নির্বাহী স্টিফেন ল্যামার নিজেও প্রধানমন্ত্রীকে এ বিষয়ে চিঠি লিখেছিলেন।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তথ্য অনুসারে, সর্বশেষ ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির (১১৩ ডলার) পরেও প্রতিযোগী আঞ্চলিক দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান অনেক পেছনে রয়েছে। যেমন ভিয়েতনামে গড় মাসিক মজুরি ২৭৫ ডলার, যা কম্বোডিয়ায় ২৫০ ডলার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here